Advertisement
E-Paper

Murder: ঘরে মহিলার রক্তাক্ত দেহ, সন্দেহ ‘খুন’

তদন্তে নেমে ধন্দে পড়েছে পুলিশও। কারণ, মহিলার গলার শ্বাসনালি কাটা, অথচ দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৬:০৩
এই ঘরে পড়ে ছিলেন দুর্গা। ইনসেটে, দুর্গার স্বামী বিশ্বনাথ। সোমবার কৃষ্ণনগরে।

এই ঘরে পড়ে ছিলেন দুর্গা। ইনসেটে, দুর্গার স্বামী বিশ্বনাথ। সোমবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।

রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এক মহিলার। সোমবার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি কুমোরপাড়া এলাকায় নিজের ঘরেই তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ মেলে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর শ্বাসনালি কাটা ছিল। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে সেই ঘরের দরজা ভিতর থেকে ছিটকিনি বন্ধ থাকায় তাঁরা কিছুটা ধন্দে পড়ে গিয়েছেন। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম দুর্গা দে (৪৬)। আগে তিনি কাঁঠালপোতার সুকান্ত সরণী এলাকায় থাকতেন। বছর চারেক আগে পারিবারিক আশান্তির জেরে তিনি ও তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ দে সেই বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। কিছু দিন ধুবুলিয়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার পর বছর দেড়েক আগে ঘূর্ণির ওই বাড়িতে তাঁরা ভাড়ায় আসেন। কাঁঠালপোতার বাড়িতে তাঁদের ছেলে-বৌমা থাকে। দুর্গা দীর্ঘ দিন ধরে স্নায়ু ও মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে পরিবারের দাবি। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল।

মৃতার স্বামী বিশ্বনাথ দে-র কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গ্যারাজ আছে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও তিনি স্ত্রীকে খাবার, জল ও ওষুধ খাইয়ে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অভ্যাস মতো বেলা ১০টা নাগাদ খোঁজখবর নিতে তিনি স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করেন। বারবার ফোন করেও সাড়া পাননি। বিশ্বনাথ বলেন, “সাধারণত এমনটা হয় না। বারবার রিং হয়ে যাচ্ছে, তার পরেও ও ফোন না ধরায় আমি চিন্তায় পড়ে যাই। আগেও একাধিক বার পড়ে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পরেই আমার বাড়িওয়ালা ফোন করে জানান, আমার স্ত্রী ঘরের ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন।”

বিশ্বনাথবাবুর কথা অনুযায়ী, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরে জানলা দিয়ে দেখেন, ঘরের ভিতরে মেঝেয় চিত হয়ে পড়ে আছেন তাঁর স্ত্রী। মাথার নীচে প্রচুর রক্ত। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঢুকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশেই দোতলা বাড়ি। নীচের তলায় ভাড়া থাকেন বিশ্বনাথেরা। পাশের ঘরে এক জন বয়স্ক মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েনটেটিভ ভাড়া থাকেন। রাস্তা থেকে বাড়িতে ঢোকার জন্য একটি লোহার গেট আছে। সেটি ভিতর ও বাইরে থেকে খোলা যায়। ফলে কেউ যদি সেই গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে আবার বেরিয়ে যায়, সেটা কারও পক্ষে জানা সম্ভব না-ও হতে পারে। বাড়িওয়ালা থাকেন দোতলায়, জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন এক মাত্র ওই মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েনটেটিভ বুদ্ধদেব মোদক। তিনি বলেন, “আমি ঘরে চা করছিলাম। সেই সময়ে বারবার পাশের ঘরে মোবাইলে বাজতে শুনি। কেউ ফোন না ধরায় আমার সন্দেহ হয়। জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি, মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন ওই মহিলা। তখনই বাড়িওয়ালাকে ফোন করে খবর দিই।” বাড়িওয়ালা পরিতোষ হালদার বলেন, “মহিলা অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও দু’বার পড়ে গিয়েছিলেন। বুঝতে পারছি না, কী ভাবে কী হল।”

তদন্তে নেমে ধন্দে পড়েছে পুলিশও। কারণ, মহিলার গলার শ্বাসনালি কাটা, অথচ দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। তাঁকে যদি কেউ খুন করে থাকে তা হলে সে ঘরে ঢুকল কী করে, বেরিয়েই বা গেল কী করে? দ্বিতীয় সম্ভবনা থাকে, নিজের গলার নলি কেটে আত্মহত্যা করার। কিন্তু পুলিশের মতে, সেটা একটু কঠিন কাজ। তা ছাড়া, মৃতার হাতে বা আশপাশে ব্লেড বা ছুরি-জাতীয় ধারালো কিছু পাওয়াও যায়নি।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত পর্যন্ত পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শ্বাসনালি কেটেই মহিলাকে খুন করা হয়েছে। ঘর থেকে কিছু খোয়া গিয়েছে কি না, তা-ও রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। ঠিক কী ঘটেছে তা জানতেতদন্ত চলছে।

Murder Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy