—ফাইল চিত্র।
নামী সংস্থার স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির সময় দোকানের অসুস্থ এক পুরুষ কর্মীকে নিজের বোতল থেকে জল দিয়েছিলেন মূল অভিযুক্ত কুন্দন সিংহ। দোকানের মহিলা কর্মীদের সম্বোধন করেছিলেন ‘সিস্টার’ অর্থাৎ বোন বলে। কর্মীদের শরীরে থাকা সোনার অলঙ্কারেও হাত না দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের বাকিদের। সপ্তাহ দুয়েক আগে নদিয়ার রানাঘাটের সেই ডাকাতির ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে গিয়ে এ সবই জানতে পারলেন তদন্তকারীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় সকলের অলক্ষে ডাকাতিকাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করেন রানাঘাট পুলিশ জেলার তদন্তকারীরা। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে দোকানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কুন্দন-সহ ধৃত তিন জনকেই। পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতী দল কী ভাবে স্বর্ণবিপণিতে প্রবেশ করেছিল, দোকানে থাকা নিরাপত্তারক্ষীকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছিল, দোকানের মহিলা কর্মীদের কী ভাবে ভয় দেখানো হয়েছিল— সব মিলিয়ে মিনিট পনেরোর ওই ‘অপারেশনের’ পুনর্নির্মাণ করা হয়। তদন্তকারীদের সূত্রও জানিয়েছে, ধৃতেরা সকলেই পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কন্নন বলেন, ‘‘ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্বর্ণবিপণির হিসাবরক্ষক মৃন্ময় সরকার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের ফের দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম। পরে বুঝলাম তদন্তের স্বার্থে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার গলায় সোনার চেন ও হাতে সোনার বালাও খুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিল কয়েক জন। কিন্তু ওদেরই এক জনের নিষেধে আমাদের গয়না আরও কেউ ছোঁয়নি।’’ এক মহিলা কর্মীও বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সেই দিন কোনও রকম খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। কুন্দন বলে যাঁকে দেখানো হল, উনি খুব ভাল ব্যবহার করেছিলেন। আমাদেরকে সিস্টার সম্বোধন করে ভয় পেতে বারণ করেছিলেন। ভেবে অবাক হচ্ছি, এত ভাল মানুষ কী ভাবে এত খারাপ কাজ করে!’’
গত ২৯ অগস্ট মঙ্গলবার বেলা প্রায় ৩টে নাগাদ রানাঘাট শহরের মিশন রোডের পাশে থাকা গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ওই দিনই কুন্দন-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিভিন্ন সূত্রে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই কুন্দনের বিরুদ্ধেই রাজ্যে একাধিক অপরাধের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, কুন্দনই দুর্গাপুরের কয়লা কারবারি রাজু ঝা খুনের মূল চক্রী। পুলিশ সূত্রে খবর, গাঁজা এবং হেরোইনে আসক্ত কুন্দন মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতেই ‘শুটার’ হন। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশের একটি খুনের ঘটনাতেও তাঁর নাম উঠে এসেছিল। রানাঘাট পুলিশ সূত্রে খবর, পুরুলিয়াকাণ্ডে জেলবন্দি মূল অভিযুক্তের সঙ্গে এই কুন্দনের যোগাযোগ ছিল। শুধু তা-ই নয়, ওই ‘অপরাধী’র হাত ধরেই অপরাধ জগতে প্রবেশ ফাইটারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy