শেষ পর্যন্ত অগ্রাধিকার পেল শৃঙ্খলাই। নবদ্বীপের রাস থেকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে ঘট বিসর্জন।
কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রধান আকর্ষণ হরেকরকম ট্যাবলো সহকারে ঘট বিসর্জন। দেখাদেখি নবদ্বীপের রাসেও তা শুরু হয়েছিল। কিন্তু উৎসবকে সুশৃঙ্খল করতে প্রশাসন রাসের ঘট বিসর্জন বন্ধ করে দিল।
শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে বাড়ছিল ঘট বিসর্জনের আড়ম্বর। এতে সমস্যায় পড়ছিল পুলিশ প্রশাসন। কেননা, রাসের দিন প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে লাখো মানুষের ভিড় সামলে পরদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে চলা রাসের শোভাযাত্রা সামলাতে হয় পুলিশকে।
এর মাঝে নতুন করে শুরু হওয়া ঘট বিসর্জনকে ঘিরে পুলিশের উপর আরও একপ্রস্থ চাপ পড়ছিল। তা ছাড়া, শোভাযাত্রার দিন সকালে গোটা শহর যখন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন পথ জুড়ে ঘট বিসর্জনের মিছিল নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। সবদিক খতিয়ে দেখে পুলিশের পক্ষ থেকে তাই ঘট বিসর্জন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপ থানা চত্বরে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে নবদ্বীপের সমস্ত রাস বারোয়ারি এবং পুরসভা-সহ বিভিন্ন দপ্তরকে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। তাতেই পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই বছর থেকে রাসে ঘট বিসর্জন বন্ধ থাকবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া-সহ জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তারা। ছিলেন নবদ্বীপের বিধায়ক এবং পুরপ্রধান। রাস উৎসব পরিচ্ছন্ন করতে পুরস্কার এবং তিরস্কারের ভারসাম্য নীতি নিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া জানান, সারা বিশ্বের মানুষ আসেন চৈতন্যভূমির এই আশ্চর্য উৎসবের শরিক হতে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই উৎসব তাঁদের বিরক্তি, ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশ চায়, নবদ্বীপের মানুষ যেন সেই দুর্নাম ঘোচাতে নিজেরাই সচেতন হন।
নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বারোয়ারিগুলির কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “মানুষকে যেন কালিমাহীন নির্মল রাস উৎসব উপহার দিতে হবে।’’
প্রায় একই সুরে নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘‘শিল্পহীন নবদ্বীপে পর্যটনই অন্যতম প্রধান শিল্প। পর্যটকদের আরও বেশি করে টানতে রাস বা দোলের মতো উৎসবের তুলনা নেই।’’