Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চাশ টাকা পেরোল পেঁয়াজ, বাজারে নজর রাখছে প্রশাসন

বন্যা নয়। তাই বলে দুর্ভোগও কিছু কম হচ্ছে না। বহু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। খেতের ফসল জলের তলায়। বেশ কিছু রাস্তা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতে নদিয়ায় আলু ও পেঁয়াজের লরি ঢোকা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জেলার বিভিন্ন বাজারে জোগান কমে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে সংকট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৫ ০১:২০
Share: Save:

বন্যা নয়। তাই বলে দুর্ভোগও কিছু কম হচ্ছে না। বহু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। খেতের ফসল জলের তলায়। বেশ কিছু রাস্তা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতে নদিয়ায় আলু ও পেঁয়াজের লরি ঢোকা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জেলার বিভিন্ন বাজারে জোগান কমে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে সংকট। আর এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা আলু ও পেঁয়াজের অতিরিক্ত দাম হাঁকতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। বিষয়টি জানার পরে নড়েচড়ে বসেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার চাপড়া বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সাবধান করে গিয়েছে পুলিশ।

শুধু চাপড়া বাজার নয়, এ দিন সকালে বেথুয়াডহরি, ধুবুলিয়া, শান্তিপুরের মতো বাজারে গিয়ে অনেক বেশি দামে আলু-পেঁয়াজ কিনেছেন অনেকেই। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার যে আলু বিকিয়েছে ন’টাকা কেজি দরে এ দিন সেই আলু বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে। আবার এক লাফে পেঁয়াজের দাম ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। চাপড়ার রানাবন্ধের বাসিন্দা হজরত শেখ বলেন, ‘‘চাপড়ায় আলু ১২ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এত দাম বলে এ দিন কম করেই কিনেছিলাম। শুনছি, বন্যার আশঙ্কায় অনেকেই বেশি বেশি করে আলু-পেঁয়াজ বাড়িতে কিনে মজুত রাখছে। এখনই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বন্যা হলে কী হবে!’’

শান্তিপুরের বাপ্পা দাস বলেন, ‘‘আমাদের বাজারে আলু ১২ টাকা ও পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। অথচ আগের দিনই আমি পেঁয়াজ কিনেছি ৩৫ টাকায়। শুনছি,আগামী দিনে আরও দাম বাড়বে।’’ কিন্তু বাস্তবে কি এতটাই দাম বাড়ার কথা? নাকি কৃত্রিম ভাবে এই দাম বাড়ানো হচ্ছে? বেথুয়াডহরির খুচরো ব্যবসায়ী দেবু সরকার বলেন, ‘‘গাড়ি ঢুকছে না। তাই আলু-পেঁয়াজ অমিল। আমাদেরকেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।’’ কৃষ্ণনগর সদর শহরের একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী আবার অন্য কথা শুনিয়েছেন। গোয়াড়িবাজারের পাইকার বাপি নন্দী বলেন, ‘‘বর্ধমানের যে রাস্তা দিয়ে আলু আসে সেই রাস্তা জলে ভেসে গিয়েছে। আবার কোথাও কোথাও জল বের করতে রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। সেই কারণে লরিও আসতে পারছে না। ফলে বাজারে আলু-পেঁয়াজের জোগান খুবই কম। ঘুরপথে কিছু কিছু আলু ঢুকলেও তা পরিমাণে কম। আবার পরিবহন খরচ বেশি। কিন্তু এর জন্য দাম এত বাড়া উচিত নয়।’’ তিনি জানান, শুক্রবার যে দামে আলুর বস্তা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে তাতে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৬০ পয়সা। সেই হিসাবে খুব বেশি হলে ন’টাকা কেজি দরে খুচরো বিক্রি হওয়ার কথা।

জেলার বড় ব্যবসায়ীদের মতে, অনেক অসুবিধা রয়েছে। কিন্তু তারপরেও পেঁয়াজের দাম এত বেশি হওয়া উচিত না। তাহলে কেন এই অবস্থা? ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরাই এমনটা করছেন। নদিয়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘অভিযোগ আমারও কানেও এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কোনও ব্যবসায়ীকে ধরতে পারলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Price hike onion Santipur Dhubulia potato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE