জলের ছিটেয় কী মূর্ছা ভাঙবে? কৃষ্ণনগরে সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।
তিনশো টাকায় একশো গোলাপ যে পাওয়া যেত, তা-ই এই অঘ্রানে এক লাফে এখন ন’শো টাকা!
সেই কবে ভাদ্র-আশ্বিনে পাত্র বা পাত্রীপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে ফুল দিয়ে বিয়েবাড়ি, বরের গাড়ি, ফুলশয্যার খাট সাজানোর বায়না নেওয়া সারা হয়ে গিয়েছে। ফুলের ব্যবসায় এইটাই রীতি। কিন্তু এই অঘ্রাণে সব চেনা ছকই ঘেঁটে গিয়েছে।
কলকাতার পাইকারি ফুল বাজারে মহাজনেরা জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন নোট ছাড়া তাঁরা ফুল দিতে পারবেন না। এ দিকে বিয়েবাড়ির লোকজন বলছেন, ‘হয় পুরনো নোট নাও, না-হয় দু’দিন সবুর করো।’ কারবারির হাতে নতুন টাকা আসবে কী করে!
তার চেয়েও বড় সমস্যা, দু’মাস আগে যে টাকায় যে কাজের চুক্তি হয়েছিল, বেলাগাম দামের বাজারে সেই চুক্তি মতো ফুল কিনতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফুলের সঙ্গে আবার জরি, ওড়না, মজুরি। সব মিলিয়ে প্রতি কাজেই প্রবল ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে ভেঙে পড়েছেন ছোট ছোট ফুল বিক্রেতারা।
ফুল বিক্রেতা বাবন দে বলেন, “এখন প্রতিটি কাজে ঘরের পয়সা যাচ্ছে। শুক্রবার আমার চারটে কাজ ছিল। চুক্তির সময়কার ফুলের দরের সঙ্গে এখনকার তুলনাই হয় না। কিন্তু খদ্দের তা শুনতে নারাজ!” এমনিতে হাজার পাঁচেক টাকার কমে এখন আর বিয়েবাড়িতে ফুলের কাজ হয় না। বরের গাড়ি তিন হাজার থেকে শুরু। বর-কনের এক জোড়া মালা শ’পাঁচেক। বিয়ের আসর ফুল দিয়ে সাজাতে আলাদা দর।
নবদ্বীপ ফুল ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক ধর্ম সরকার বলেন, “লোকে এসে বলছে, পুরনো নোট নিলে বেশি ফুল কিনবে। কিন্তু আমরাও পুরনো নোট নিতে পারছি না। ফলে ওঁরাও যেটুকু না হলে নয়, কিনছেন।” মোদ্দা কথা, কারবারিদেরই এখন ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যাওয়ার জোগাড়।
একশো গোলাপের দর এমনিতে ১৫০-২০০ টাকা, বিয়ের মরসুমে ২৫০-৩০০ পর্যন্ত ওঠে। এ বার তা ৮৭০-৯০০ টাকায় পৌঁছেছে। একশো সূর্যমুখী ৫৫-৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০ টাকার আশেপাশে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জরি, ওড়না এবং কৃত্রিম ফুলের দামও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy