Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্লাস্টিক রুখতে হাঁটছেন পঙ্কজ

গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস থেকে এই কাজ শুরু করেছেন তিনি, তাঁর শিলিগুড়ির বাড়ি থেকে। 

হাঁটতে হাঁটতে প্রচার: পঙ্কজ মিশ্র (পোস্টার হাতে)। নিজস্ব চিত্র

হাঁটতে হাঁটতে প্রচার: পঙ্কজ মিশ্র (পোস্টার হাতে)। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৬:০০
Share: Save:

হবিবপুরের মোড়ে এক চায়ের দোকানে চা খেতে গিয়েই বিপত্তিটা বেধেছিল। বলেন কী! প্লান্টিকের কাপে চা! মানুষকে অকালে মারতে চান নাকি? আর আপনারাও ওই কাপে চা খাবেন না। তাতে শরীরের বড় ক্ষতি হতে পারে।

বছর ছাব্বিশের যে যুবক কথাগুলো বলছিলেন তার গোটা শরীর ঘামে ভিজে গিয়েছিল। চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। কিন্তু উৎসাহের খামতি নেই। সকলকে যত্ন করে প্লাস্টিক ব্যবহারের বিপজ্জনক দিক নিয়ে টানা বুঝিয়ে চলেছেন তিনি। গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস থেকে এই কাজ শুরু করেছেন তিনি, তাঁর শিলিগুড়ির বাড়ি থেকে।

রবীন্দ্রনাথের গানের লাইনটা গেঁথে গিয়েছিল পঙ্কজ মিশ্র নামে সেই যুবকের মাথায়।“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে।” কারও অপেক্ষা না-করে প্লাস্টিক মুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে একাই পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হাঁটতে-হাঁটতে ২০ জুন তিনি পৌঁছে গিয়েছেন নদিয়ার রানাঘাটের হবিবপুরে। জানিয়েছেন, কন্যাকুমারিকার বিবেকানন্দ মেমোরিয়ালে যাত্রা শেষ করবেন।

২০১২ সালে শিলিগুড়ি কলেজ অফ কমার্স থেকে স্নাতক হন শিলিগুড়ির গাঁধীনগরের বাসিন্দা ওই যুবক। বাবার বড় ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা। কিছুদিন ব্যবসা সামলালেও তাতে মন বসেনি। আইএএস পরীক্ষার প্রস্ততি শুরু করেন ওই যুবক। পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, প্রতিবছর সমুদ্রে ৮০ লক্ষ টন প্লাস্টিক ফেলা হয়। তাঁর কথায়, “বড়-বড় লরিতে ২০ টন করে মাল ধরে। সেটা ধরে হিসেব করতে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে যায় আমার। মনে হয়, এই বিপদ থেকে আমার মতো করে প্রকৃতিকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে।”

যেমন ভাবা তেমন কাজ। অনেককেই বলেছেন তাঁর সিদ্ধান্তের কথা। পাগলের কাণ্ড বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সকলে। তখনই একা বেরিয়ে পড়েন তিনি। জানিয়েছেন, দিনে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার হাঁটছেন। রাস্তায়, বাজারে, দোকানে যেখানে যত জনকে পেরেছেন প্লাস্টিক সম্পর্কে সতর্ক করছেন। ভোর চারটে থেকে শুরু হচ্ছে হাঁটা। রোদ বাড়লে আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের তলায় বা সস্তার হোটেলে। রোদ কমলে আবার শুরু হচ্ছে হাঁটা। পঙ্কজের কথায়, “প্লাস্টিকের জন্য মারাত্মক বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানব সভ্যতা। এটা না-বুঝলে ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE