রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছিলই। এবার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল। সেই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন আন্দোলনকারীদের নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের অস্থায়ী রেজিস্ট্রারকে সরিয়ে সম্প্রতি বিশ্বদ্যালয়েরই এক অধ্যাপককে ওই পদে বসিয়েছেন উপাচার্য ধরণীধর পাত্র। বর্তমান রেজিস্ট্রার তৃণমূলের অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার নেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারিদের একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করেছে তৃণমূল।
মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে ওয়েবকুপার স্থানীয় নেতৃত্বের বনিবনা নেই। অপসারিত রেজিস্ট্রার আবার মঞ্চের নেতাদের ঘনিষ্ঠ। সেই বিষয় নিয়ে আন্দোলনে নামে মঞ্চ। উপাচার্য যেহেতু নিজ ক্ষমতা বলে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার বদল করতে পারেন। ফলে নিয়ম নিয়ে কোনও প্রশ্ন তারা তুলতে পারেনি।
মঞ্চের নেতাদের বক্তব্য, রেজিস্ট্রার পদটি আধিকারিকের। সেই পদে অধ্যাপককে বসানো নিয়েই তাঁদের আপত্তি। শুরু থেকেই তাঁরা সেই দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। নবনিযুক্ত উপাচার্যকে সরানোর জন্য তাঁরা উপাচার্যকে সাত দিন সময় দিয়ে ছিলেন। তার মধ্যে তাঁকে না সরানো হলে লাগাতার আন্দোলনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে উপাচার্যের দাবি, রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব বরাবরই অধ্যাপকেরাই সামলেছেন। ফলে এতে গোলমালের কিছু নেই। মঙ্গলবার থেকে মঞ্চ লাগাতার কর্মবিরতি এবং ধরনা শুরু করে। বিশ্বিদ্যালয়ের ১৬টি কৃষি খামার, পাঁচটি কৃষি গবেষণাকেন্দ্র, দুটি কলেজ-সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে কাউকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনও।
গত দু’সপ্তাহ ধরে উপাচার্যকে তাঁর চেম্বারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে প্রশাসনিক নানা অসুবিধা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কর্মচারিদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই তৃণমূল বনাম তৃণমূল। ওদের নিজেদের দ্বন্দ্বে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম লাটে উঠেছে। কিন্তু, কেউ কিছুই করছে না।’’
মঙ্গলবারের মতো বুধবারও আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের ঘরের সামনে ধরনা শুরু করেন। দুপুর আড়াইটা নাগাদ উপাচার্য নিজের চেম্বার থেকে বেরনোর সময় আন্দোলনকারীরা তাঁর রাস্তা আটকায়। উপাচার্য জানান, বেরতে গেলে তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে কোনও রকমে বের করে নিয়ে যান।
যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক শেখ মুসিয়ার আলি বলেন, ‘‘উপাচার্য মিথ্যা অভিযোগ করছেন। তাঁর ঘরের সামনে ভিড় ছিল। ফলে বেরতে গিয়ে হয়তো তাঁকে সামান্য বাধা পেতে হয়েছে।’’