প্রায় দেড় কোটি টাকা আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুরের আঞ্চলিক কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতরের এক কর্মীকে গ্রেফতার করল সিআইডি। এই নিয়ে গত দু’সপ্তাহে দু’জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ধৃতের নাম রঞ্জিত কুমার। বাড়ি বিহারের শেখপাড়ার বারবিঘা গ্রামে। সে ক্যাশ সেকশনের কর্মী। ধৃত ওই কর্মীকে এ দিনই জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ছ’দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সরকারী আইনজীবী সোমনাথ চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসে আর্থিক জালিয়াতি চলেছে। এ পর্যন্ত অডিটে করে প্রায় দেড় কোটি টাকা তছরুপের ঘটনা সামনে এসেছে। দু’জন পিএফ কমিশনার রঘুনাথগঞ্জ থানায় গত দু’বছরে চারটি এফআইআর দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ বছরের মে মাসে সিআইডিকে মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে গত ৩ জুলাই এই ঘটনায় সিআইডি আকবর আলি নামে এক বিড়ি ঠিকাদারকে সুতির মধুপুরে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আকবর আলির জবানবন্দির ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় ওই পিএফ দফতরের ক্যাশ বিভাগের সিনিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট রঞ্জিত কুমারকে। রঞ্জিত কুমারকে এর আগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। মাস খানেক আগে তা তুলে নিয়ে তাকে জলপাইগুড়ি অফিসে বদলি করা হয়। সিআইডির তদন্তকারী অফিসার অজিতকুমার মণ্ডল জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডির বহরমপুর অফিসে ডেকে পাঠানো হয় রঞ্জিতকুমারকে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সে স্বীকার করে অফিসেরই এক কর্মী ও আকবর আলির সাহায্য নিয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, ওই পিএফ অফিস থেকেই বিড়ি শ্রমিকের নামে পেনশন ও পিএফের টাকা ‘অ্যাকাউন্ট পেয়ি’ চেক কেটে তা সরাসরি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়া হত। সে টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ত বিড়ি শ্রমিকের ওই নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টেই। পরে সেই বিড়ি শ্রমিকের কাছে দালাল পাঠিয়ে বলা হত ভুল করে তাঁর (বিড়ি শ্রমিকের) অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা জমা পড়ে গিয়েছে। তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে হয় নগদে সেই টাকা তুলে নেওয়া হত বা চক্রে জড়িত কারও অ্যাকাউন্টে সেই টাকা জমা করা হত। এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে রঞ্জিতকুমার অবশ্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘অভিযোগই মিথ্যে। আমি এই জালিয়াতির সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নই। তাই সিআইডির তলব পেয়ে বহরমপুরে তাদের দফতরে হাজির হয়েছিলাম। তখনই আমাকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy