Advertisement
E-Paper

প্রশ্নের মুখে তৎপরতা, দুয়ারে শীত, ডেঙ্গি চলছে

২০১৫ সালে নদিয়ায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২১১। পরের বছর একলাফে বেড়ে হয় ১৬৮০। এ বছর ৮ নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত ২৪৮৫ জন। দিন পনেরো আগেও মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৬৩ জন। এই ক’দিনে তা বেড়ে  দাঁড়িয়েছে ৯৮০ জনে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৬

শীত এসে গেল প্রায়। কিন্তু ডেঙ্গিতে লাগাম নেই এখনও।

দুই জেলাতেই প্রতি বছর লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। কৃষ্ণনগর থেকে জঙ্গিপুর, যে হারে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, তা রীতিমতো আশঙ্কাজনক।

২০১৫ সালে নদিয়ায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২১১। পরের বছর একলাফে বেড়ে হয় ১৬৮০। এ বছর ৮ নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত ২৪৮৫ জন। দিন পনেরো আগেও মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৬৩ জন। এই ক’দিনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮০ জনে। কিছু জায়গায় ডেঙ্গির প্রকোপ কম। কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়ায় এখনও ডেঙ্গি রোগীর খবর নেই। রানাঘাট পুর এলাকায় দু’জন, শান্তিপুরে ছ’জন রোগীর খোঁজ মিলেছে। কৃষ্ণনগরের অবস্থা বেশ খারাপ। কৃষ্ণনগর-১ ব্লকে ৪১২ জন ও ২ ব্লকে ৩১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চাকদহে ২২৫, হরিণঘাটায় ১৬৭, নবদ্বীপে ১২৭, হাঁসখালি ব্লকে ১৭২ জনের ডেঙ্গি হয়েছে।

কৃষ্ণনগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার সন্দীপ মজুমদারের অভিযোগ, “মশা বা লার্ভা মারা তেল ছেটাতে দেখি না কাউকে। নর্দমাগুলোয় দিনের পর দিন জল জমে আছে।” পুরপ্রধান অসীম সাহা অবশ্য এখনও দাবি করছেন, “সারা বছর ধরেই আমরা মশা মারি। সর্বত্র নিয়মিত ধোঁয়াও দেওয়া হচ্ছে।” তা হলে কৃষ্ণনগরে রোগীর সংখ্যা অন্য পুরসভার তুলনায় এত বেশি কেন? পুরপ্রধানের বক্তব্য,“আসলে আমরা কোনও তথ্য গোপন করছি না।” অন্য পুরসভা গোপন করছে? পুরপ্রধান উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন।

নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিক তাপস রায় অবশ্য বলেন, “কোথাও তথ্য গোপন করার কথা আমার জানা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, ডেঙ্গি দমনে পুরসভাগুলির আরও সক্রিয় হওয়ার অনেক জায়গা রয়েছে।”

মুর্শিদাবাদে মূলত জঙ্গিপুর মহকুমা এলাকায় ডেঙ্গির প্রভাব বেশি। সব থেকে বেশি সমশেরগঞ্জে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯০ ছাড়িয়েছে। সুতি ২ ব্লকে ৭৮ জন, ফরাক্কায় ৪৫ জন, বহরমপুর শহরে ৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ধুলিয়ান পুরসভা এলাকায় আক্রান্ত ২৫ জন। কিছু এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি কেন? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের ব্যাখ্যা, “যে এলাকায় প্রশাসন ডেঙ্গির মশা ও লার্ভা মারার জন্য ঠিক ব্যবস্থা নিয়েছে, সেখানে প্রকোপ কম। যারা গুরুত্ব দেয়নি, সেখানে ডেঙ্গির দাপট বেশি।”

তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার মতে, জঙ্গিপুর মহকুমার বহু লোক বাইরে কাজে যান। তাঁদের অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ফিরছেন। তবে শহর থেকে গ্রাম সব এলাকাতেই মশার লার্ভা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। ধুলিয়ানের পুরপ্রধান সুবল সাহার বক্তব্য, “জমা জল বের করে দিতে আমরা পাম্প বসিয়েছি। কিন্তু মাঝে-মধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে নিচু এলাকায় জল জমছে।”

ইতিমধ্যে শান্তিপুরে রাজনৈচিক জলঘোলাও হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ গিয়েছে। পুরপ্রধান অজয় দে অবশ্য দাবি করেন, “ডেঙ্গি রুখতে আমাদের প্রশংসা করেছে স্বাস্থ দফতর। হয়তো কেউ চক্রান্ত করেই এ সব করাচ্ছে।” নেতা-কর্তাদের চাপানউতোরের মধ্যেই নিঃশব্দে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি।

Dengue Fever
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy