Advertisement
E-Paper

উৎসবের তাল কেটে অসুর বৃষ্টি

পুজোর চার দিন এমন বৃষ্টিনামচায় নাজেহাল সকলে। কোথাও কাদা ডিঙিয়ে প্রতিমা দর্শন করতে হল। কোথাও প্যান্ডেলে হাঁটুজল দেখে ফিরে গেলেন লোক। কোথাও আবার বৃষ্টির ছাটে থিমের বারোটা বেজে যাওয়ায় আকাশের মতো মুখ ভার করে বসে থাকলেন পুজো উদ্যোক্তারা।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১৩
মিলমিশে: দুর্গা মণ্ডপের সামনে দিয়ে চলল মহরমের তাজিয়া। রবিবার লালবাগে।—নিজস্ব চিত্র।

মিলমিশে: দুর্গা মণ্ডপের সামনে দিয়ে চলল মহরমের তাজিয়া। রবিবার লালবাগে।—নিজস্ব চিত্র।

কখনও ঝিরঝির, কখনও ঝমঝম।

পুজোর চার দিন এমন বৃষ্টিনামচায় নাজেহাল সকলে। কোথাও কাদা ডিঙিয়ে প্রতিমা দর্শন করতে হল। কোথাও প্যান্ডেলে হাঁটুজল দেখে ফিরে গেলেন লোক। কোথাও আবার বৃষ্টির ছাটে থিমের বারোটা বেজে যাওয়ায় আকাশের মতো মুখ ভার করে বসে থাকলেন পুজো উদ্যোক্তারা।

ডিজে নয়, সেলফি নয়, সবাইকে হারিয়ে এ বার পুজোয় সেরা অসুরের শিরোপা পেল বৃষ্টি! হোয়াটস-অ্যাপ, ফেসবুকে ছড়াল—‘আগে জানলে নতুন জামা-প্যান্ট না কিনে রেনকোট কিনতাম!’ কারও আক্ষেপ, ‘হতচ্ছাড়া বৃষ্টি পুজোর আনন্দে জল ঢেলে দিল।’ কারও প্রশ্ন, বর্ষা কি এল ফিরিয়া?’

চতুর্থীর সকালে আকাশ দেখেই মনে কু ডেকেছিল রতন দাসের। ঢাকে প্লাস্টিক জড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। নদিয়ার শ্যামনগরের রতনের মতো অনেকেরই সেই সকালে গন্তব্য ছিল রানাঘাট স্টেশন। প্রতি বছর চতুর্থীর সকালে পুজো কমিটি আর বারোয়ারির লোকেরা ওখানেই আসেন ঢাক বায়না করতে। কিন্তু বেআক্কেলে বৃষ্টির কারণে মাঠে মারা গেল ঢাকের বাজার। বৃষ্টির মধ্যে পুজো কর্তারা তেমন ভিড় করেননি। বৃষ্টিকে দোষারোপ করে দিনের শেষে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন রতন।

এ ভাবে ঢাকি থেকে আইসক্রিম বিক্রেতা, পুজো উদ্যোক্তা থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই বৃষ্টি মাথায় নাস্তানাবুদ হয়েছেন। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী তো বটেই, দশমীর বিকেলও বৃষ্টিকুচি থেকে রেহাই পায়নি দুই জেলা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ। তবে সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে অষ্টমীর দিন। সে দিন বৃষ্টিতে ভেসেছে লালবাগ থেকে বাদকুল্লা। এ বার সন্ধিপুজো ছিল সন্ধ্যায়। কিন্তু বিকেল গড়াতেই প্রবল বৃষ্টি। অনেকেই বাড়ি থেকে পুজোমণ্ডপ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। শিমুরালির কণিকা সরকার বলেন, ‘‘প্রতি বছর সন্ধিপুজোর অঞ্জলি দিই। এ বারই দেওয়া হল না।”

মুর্শিদাবাদে বড় পুজোর আয়োজন করে লালবাগ আয়েসবাগ সর্বজনীন। এ বার স্বামী নারায়ণ মন্দিরের আদলে তারা মণ্ডপ তৈরি করেছিল। কিন্তু সে পুজোর আয়োজন ধুয়ে গিয়েছে বৃষ্টিতে। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ দাস বলেন, “পুজোয় প্রায় রোজই দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। এত পরিশ্রম, অর্থব্যয়ের পর পুজোর দিনে বৃষ্টি হলে কি ভাল লাগে, বলুন?” তবে আয়েসবাগের প্রতিমা থাকছে মঙ্গলবার পর্যন্ত। উদ্যোক্তাদের আশা, বৃষ্টি ছুটি নিলে ভিড় বাড়বে মণ্ডপে।

চাকদহের ছাত্রমিলনী ক্লাবের আকর্ষণ ছিল পাহাড়ে উঠে প্রতিমা দর্শন। প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ের খাড়া পথ ভেঙে আর ঠাকুর দেখতে চাননি অনেকেই। মণ্ডপের সামনের মাঠে থইথই জল। ফলে চাকদহের ‘ম্যাডক্স স্কোয়ারে’ সে ভাবে পুজো জমেনি। হারিয়ে যাওয়া রাজপ্রাসাদে ছিল নবদ্বীপ মণিপুরের প্রতিমা। বৃষ্টির দাপটে জৌলুস হারানো সে প্রাসাদ শেষ পর্যন্ত যেন সত্যিই অতীতের ছায়া আঁকড়েই ছিল। পুজো কমিটির সম্পাদক মানস সাহার আক্ষেপ, “মণ্ডপে প্রচুর আলোর কাজ ছিল। অষ্টমীর বৃষ্টিতে সেই আলোকসজ্জা অনেকটাই ক্ষতি হয়েছিল। যা পরে আর ঠিক করা গেল না।”

Durga Puja Weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy