Advertisement
E-Paper

কোজাগরীতেই শুরু রাসের প্রস্তুতি

প্রথা মেনে ওই কাঠের কাঠামোয় শালগ্রাম শিলা ছুঁইয়ে, ‘পাট পুজোর’ মধ্যে দিয়েই নবদ্বীপে রাসের আনুষ্ঠানিক সূচনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৪
নবদ্বীপে পাটপুজোয় রাসের সূচনা। নিজস্ব চিত্র

নবদ্বীপে পাটপুজোয় রাসের সূচনা। নিজস্ব চিত্র

৬ বাই ৪ ইঞ্চি পুরু শালকাঠ দিয়ে তৈরি ৫ ফুট চওড়া আর ৭ ফুট লম্বা পোক্ত কাঠামো। ফুল, মালা আর মোমবাতি দিয়ে সাজানো। চারপাশ ধুয়েমুছে সাফ। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় এক দল যুবক। কখন আসবেন পুরোহিত। কোজাগরীর রাতে নবদ্বীপ শহরে এমন প্রতীক্ষার ছবি জানান দেয়, নবদ্বীপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব রাসের সূচনা হল।

প্রথা মেনে ওই কাঠের কাঠামোয় শালগ্রাম শিলা ছুঁইয়ে, ‘পাট পুজোর’ মধ্যে দিয়েই নবদ্বীপে রাসের আনুষ্ঠানিক সূচনা। গত বছরের হিসেব পেশ করে নতুন বছরের কমিটি তৈরি করার পরে বাজি ফাটিয়ে, ফানুস উড়িয়ে খাওয়াদাওয়া করে বৃহস্পতিবার শ্রী আর সম্পদের দেবী আরাধনার রাতেই শুরু হয়ে গেল নবদ্বীপের রাসের কাউন্টডাউন। কোজাগরী পূর্ণিমার এক মাস পরেই বৈষ্ণবদের অন্যতম প্রিয় রাস পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত হয় নবদ্বীপের নিজস্ব ধারার রাস উৎসব। ৪ নভেম্বর এ বছর নবদ্বীপে রাস। পরের দিন শোভাযাত্রা বা স্থানীয় ভাষায় ‘আড়ং’। এ বার ছোটবড় মিলিয়ে নবদ্বীপে রাসে সাড়ে তিনশোর বেশি প্রতিমা হয়েছে।

নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হওয়া নবদ্বীপের রাস উৎসবের বয়স তিনশো বছরের দিকে পা বাড়িয়েছে। সূচনা পর্বে শক্তির উপাসক কৃষ্ণচন্দ্র কার্তিক পূর্ণিমার রাতে নবদ্বীপের সেকালের নৈয়ায়িক পণ্ডিতদের শক্তি পুজো করতে শুধু মৌখিক উৎসাহই দেননি, রাজানুগ্রহের নিদর্শন হিসেবে অকাতরে বিলিয়েছেন পারিতোষিকও। বাদ্যকর থেকে প্রতিমা শিল্পী কেউ বাদ পড়েনি তাঁর কৃপাদৃষ্টি থেকে। যে নৈয়ায়িক ব্রাহ্মণেরা তাঁর কথা মতো রাস পূর্ণিমা তিথিতে শক্তির উপাসনা করতেন, তাঁদের পুজো যাতে ষোড়শপচারে হতে পারে সে জন্য রাজকোষ থেকে অর্থ দেওয়া হতো। এহেন রাজানুগ্রহে পুষ্ট রাস উৎসবের মেজাজ তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাঁধা হয়ে গিয়েছিল একটু চড়া সুরে। পরে কালের নিয়মেই নদিয়ারাজের যুগ শেষ হয়েছে। কিন্তু রাসের মেজাজটা থেকেই গিয়েছে।

কোজাগরীর নিস্তব্ধ রাতে তুমুল শব্দ আর আলোর সমারোহে নবদ্বীপের পাটপুজো সেই রাজকীয় মেজাজেরই প্রতিফলন। পাটপুজো আসলে দেবীর আবাহন। সমস্ত বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে উৎসব যাতে নির্বিঘ্নে হয় তার জন্য স্বস্তিবাচক পুজো। আগামী এক মাস ধরে নবদ্বীপ একটু একটু করে রাসের প্রস্তুতিতে সেজে উঠবে। পূর্ণিমার রাতে কালী সহ কয়েকশো শক্তিমূর্তির পুজো নবদ্বীপের রাসকে অনন্য উৎসবের মর্যাদা দিয়েছে। উৎসব পর্যটনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা নবদ্বীপের অর্থনীতিতে রাস সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মরসুম। সেই রাসের অপেক্ষায় পথ চেয়ে নবদ্বীপ।

Ras Yatra Nabadwip
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy