Advertisement
E-Paper

কম বয়সে বিয়ে নয়, শপথ স্কুল পড়ুয়াদের

নিছকই সাদামাটা বাৎসরিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতি বছরই হয়। কিন্তু, এ বারের অনুষ্ঠান যেন অন্য মাত্রা যোগ করল। শুক্রবার অনুষ্ঠানের মঞ্চে শপথ নিল ছাত্রীরা। কম বয়সে বিয়ে না করার শপথ। এলাকায় বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়ার শপথ। ঘটনাস্থল, সাগরদিঘির মোরগ্রাম হাইস্কুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৫

নিছকই সাদামাটা বাৎসরিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতি বছরই হয়। কিন্তু, এ বারের অনুষ্ঠান যেন অন্য মাত্রা যোগ করল। শুক্রবার অনুষ্ঠানের মঞ্চে শপথ নিল ছাত্রীরা। কম বয়সে বিয়ে না করার শপথ। এলাকায় বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়ার শপথ। ঘটনাস্থল, সাগরদিঘির মোরগ্রাম হাইস্কুল।

কেন এমন শপথ? স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার দাস বলেন, “এলাকায় ১৩২ বছর ধরে চলছে এই স্কুল। তবু, এলাকায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা গেল কই? প্রশাসনের উদ্যোগে কিছুটা রাশ টানা গেলেও, দাঁড়ি টানা যায়নি। ছাত্রীরা তাই নিজেরা শপথ নিল।’’

অরুণবাবুর মতে, কচিকাঁচাদের সচেতন করেই এই সমস্যার মূলে পৌঁছে আঘাত করতে হবে। তবেই রোখা সম্ভব হবে এমন প্রথা।

প্রতি বছর বাৎসরিক ক্রীড়ার সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় মোরগ্রামের এই স্কুলটিতে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাই নানা ধরণের অনুষ্ঠান করে। তেব এ বার নজর কেড়েছে ছাত্রীদের এমন শপথ নেওয়া। মুখে মুখে ছড়িয়েছে এলাকাতেও। ছাত্রীরা বলছেন ‘‘আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম।’’

এ দিন শপথ নিয়েছেন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী আঁখি কর্মকার। আঁখির কথায়, “ বাড়িতে অনেকবারই শুনতে হয়েছে, তোর বয়সে আমাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি বলে দিয়েছি, যুগ বদলেছে। তাই এখনই বিয়ে নয়। কলেজে পড়তে চাই।” নবম শ্রেণির ছাত্রী শিল্পা খাতুনের জানাল, মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই তার দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। সেদিন বাবাকে বোঝাতে পারেনি কেউ। এ দিন সে শপথ নিয়েছে, কলেজ পার হওয়ার আগে কিছুতেই বিয়ে নয়। তেমন হলে এ বার সে নিজেই প্রতিবাদ করবে। পাশে স্কুলের শিক্ষকরাও রয়েছেন।

বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নেওয়া অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বাহালনগরের আমিনা খাতুনের অভিজ্ঞতা কিছুটা আলাদা। তার গ্রামে দু’বছর আগেও কম বয়সে বিয়ে ছিল সাধারণ ঘটনা। তবে এখন তা অনেকটাই কমেছে। তার বাড়ির লোকেরাও এখন বাল্যবিবাহের বিরোধী। সে এখন অন্য বালিকাদের বিয়ে আটকানোর লড়াইয়ে সামিল হতে চায়।

তবে আমিনার মতো তেমন স্বস্তিতে নেই একাদশ শ্রেণির রিয়া দাস। মোরগ্রামে দাদুর বাড়িতে থেকেই লেখাপড়া করছেন দুই বোনের বড় রিয়া। তার কথায়, “বাড়িতে চেষ্টা করছে বিয়ের জন্য। কিন্তু, আমি বাধা দিয়ে বলেছি এখন নয়। শুক্রবার শপথটা নিয়ে নিলাম, যাতে বাবাকে বলতে পারি, শিক্ষকদের কাছে নেওয়া শপথ ভাঙতে পারব না।”

এ দিনের শপথে হাজির ছিলেন সাগরদিঘির যুগ্ম বিডিও পাঁচুগোপাল পাল। তিনি বলছেন, “মুর্শিদাবাদে বাল্য বিবাহের হার রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে শপথ নেওয়াতে হচ্ছে। ভাল উদ্যোগ। পড়ুয়ারা রুখে দাঁড়ালে এমন প্রথা রোখা যাবে।”

Early marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy