Advertisement
১৯ মে ২০২৪
হোগলবেড়িয়া

রাস্তার অপেক্ষায় চরমেঘনা

অবশেষে রাস্তা পাচ্ছে চরমেঘনা। মেঘনা সীমান্তে কাঁটাতারের ও পার থেকে চরমেঘনা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পিচ দিয়ে মুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। নানা জটিলতার কারণে এতদিন ওই এলাকায় কোনও স্থায়ী নির্মাণকাজ সম্ভব হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৪
Share: Save:

অবশেষে রাস্তা পাচ্ছে চরমেঘনা। মেঘনা সীমান্তে কাঁটাতারের ও পার থেকে চরমেঘনা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পিচ দিয়ে মুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। নানা জটিলতার কারণে এতদিন ওই এলাকায় কোনও স্থায়ী নির্মাণকাজ সম্ভব হয়নি। এ বার সেই বাধা দূর হতেই চরমেঘনায় উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করতে চলেছে প্রশাসন।

সেই কবে গ্রামে তৈরি হয়েছিল মোরামের রাস্তা। তারপর আর কোনও দিন সংস্কার হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গিয়েছে ইটের চিহ্ন। বর্ষায় গোড়ালি সমান কাদা। আর শুখা মরসুমে ধুলো আর ধুলো। চরমেঘনার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল রাস্তার। ভোটের সময় বহু বার রাস্তার প্রতিশ্রুতি শুনলেও বাস্তবে তা পূরণ হয়নি। এ বার সেই রাস্তা তৈরি হবে শুনে উচ্ছ্বসিত গ্রামের বাসিন্দারা।

কিন্তু চরমেঘনা কেন এতদিন রাস্তা পেল না?

করিমপুর ১ বিডিও সুরজিৎ ঘোষ বলছেন, “আসলে চরমেঘনা ভারতের দখলে থাকলেও এত দিন সেটা ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড। সেই কারণে আমরা ওখানে কোনও স্থায়ী নির্মাণ করতে পারতাম না। গত বছর ওই ভূখণ্ড ভারতভূক্তি হয়েছে। ফলে এখন আর সেই বাধা নেই।’’ ২০১২ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই গ্রামে প্রথম বিদ্যুৎ ঢোকে। তার চার বছর পরে এ বার রাস্তা হচ্ছে। হোগলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য, চরমেঘনার বাসিন্দা বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “রাস্তাটা চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছিল। বর্ষার সময় গ্রামের বাইরে যাওয়াটাই অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। গ্রাম, কাঁটাতার উজিয়ে স্কুলে যেতে অসুবিধা হয় পড়ুয়াদের। এ বার অন্তত সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে পাওয়া যাবে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে চরমেঘনায় গিয়েছিলেন করিমপুরের বিধায়ক তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। গ্রামের মানুষ তাঁর কাছে একটা রাস্তা চেয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনিও। সেই রাস্তার টাকা অনুমোদন হয়ে যাওয়ার পরে মহুয়া বলছেন, “আমি চরমেঘনার মানুষকে কথা দিয়েছিলেম একটা পিচের রাস্তা করে দেব বলে। আজ সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পেরে আমি খুশি। ওই গ্রাম নিয়ে আমার আরও কিছু পরিকল্পনা আছে।” নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “চরমেঘনার রাস্তা বিএডিপি প্রকল্পের টাকায় তৈরি হবে। খুব শিগ্‌গির আমরা টেন্ডার ডেকে কাজও শুরু করে দেব।”

কাঁটাতারের ওপারের গ্রাম চরমেঘনায় নেই এর তালিকা বেশ দীর্ঘ। রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তারপরেও থেমে থাকেনি ওই গ্রাম। গত কয়েক বছরে বেড়েছে শিক্ষিতের হার। সব বাড়ির ছেলেমেয়েরাই স্কুলে যায়। এখন অনেকে চাকরি পেয়ে স্বনির্ভর হয়েছেন। একাদশ শ্রেণির কৃষ্ণা মন্ডল, লক্ষ্মী মণ্ডলেরা বলেন, “শুনছি রাস্তাটা হবে। বর্ষায় কী কষ্ট করে ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতাম তা কেবল আমরাই জানি। রাস্তাটা হয়ে গেলে আমাদের পরের পড়ুয়াদের আর এত কষ্ট করতে হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE