Advertisement
১১ মে ২০২৪
Nadia

Nadia: ছেলে অধ্যাপক, মেয়ে শিক্ষিকা, শান্তিপুরে বছরভর বার্ধক্য ভাতা পান অনূর্ধ্ব ৬০ মা!

৬০ বছরের গণ্ডি পেরোলে তবেই  মেলে বার্ধক্য ভাতা। পারিবারিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা, পরিবারের কেউ সরকারি চাকরি করেন কি না, সে সবও বিবেচ্য।

বার্ধক্য ভাতা নেওয়া দম্পতির বাড়ি।

বার্ধক্য ভাতা নেওয়া দম্পতির বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ২২:৫২
Share: Save:

বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের ব্যয়ভার সামলাতে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি যে খারাপ, তা স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বচ্ছতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারেও নির্দেশিকা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। সেই মতো শান্তিপুর পৌরসভার তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রত্যেক ভাতা প্রাপকের বিস্তারিত তালিকা। এই বিশেষ অভিযান চালাতেই চক্ষুচড়কগাছ পুর কর্মচারীদের। দেখা যাচ্ছে, ভাতা পাচ্ছেন ৫৯ বছর বয়সী এক মহিলা। যাঁর ছেলে অধ্যাপক এবং মেয়ে শিক্ষিকা।

সূত্রের খবর, শান্তিপুর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ডক্টর বিসি রায় রোডের বাসিন্দা মাধাই ঘোষের বাড়িটি বিশাল। অতি সচ্ছ্বল পরিবার বলেই পরিচিত। তিনি নিজে বার্ধক্য ভাতা উপভোক্তা বহুদিন আগে। কিন্তু তাঁর স্ত্রী আভাও বার্ধক্য ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন বছর কয়েক আগে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৬০ বছরের গণ্ডি পেরোলে তবেই মেলে বার্ধক্য ভাতা।সেটাও পারিবারিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা, সম্পত্তি, পরিবারের কেউ সরকারি চাকরি করেন কি না, এ সব তথ্য যাচাই করার পর। এই দীর্ঘ নিয়মের তালিকায় যদি কেউ বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হন, তবেই উপভোক্তার তালিকায় নাম ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিবারের এক সদস্য পৌরসভার কর্মী হওয়ার কারণেই হয়তো আভা দেবীর বয়সের সীমা এ ক্ষেত্রে কেউ মানেনি। তাঁর পারিবারিক সচ্ছলতাসত্ত্বেও গত কয়েক বছর ধরে প্রতিমাসে নিয়ম করে ভাতা পেয়ে আসছেন অধ্যাপক ও শিক্ষিকার বাবা-মা, দু’জনেই। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাড়ির একমাত্র ছেলে সুমিত ঘোষ মুর্শিদাবাদ বেলডাঙা কলেজের অধ্যাপক। সুমিতবাবুর বোন একটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

এই ঘটনা জানাজানি হতে এলাকার দরিদ্র বয়স্করা ঘোষ পরিবারের গগনচুম্বী বাড়ির দিকে আঙুল তুলেছেন। প্রকৃত ভাতার দাবিদার বলে দাবি করা জনৈক অমর বিশ্বাসের অভিযোগ,‘‘ওই পরিবারের এক ভাইপো শান্তিপুর পুরসভায় কর্মচারী। সেই কারণেই হয়ত সঠিক অনুসন্ধান হয়নি। এ দিকে ষাটোর্ধ্ব হওয়ার পরেও দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আমার আবেদনপত্র জমা পড়ে রয়েছে শান্তিপুর পুরসভায়।’’

স্বজনপোষণ নাকি পুরকর্মীদের উদাসীনতা? খোঁজ নেওয়া হয় শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষের কাছে। তিনি অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েই বলেন, ‘‘ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি পুর কর্মচারীদের। ভুল হলে নিশ্চয়ই শাস্তি হবে।’’ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার কাউন্সিল সদস্য শুভজিৎ দে বৃদ্ধের বার্ধক্য ভাতার কথা জানলেও তাঁর স্ত্রীয়ের ভাতা সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে সুমিত ঘোষের প্রতিক্রিয়া জানতে গেলে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেন সদস্যরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia Government Schemes Shantipur Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE