Advertisement
E-Paper

শান্তিপুর কলেজে অশান্তি, মাথা ফাটল অধ্যাপকের, পাল্টা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শোরগোল

অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে পাল্টা এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করা হয়েছে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪ ২০:৪০
Shantipur College Professor injured

শান্তিপুর কলেজের আহত অধ্যাপক। —নিজস্ব চিত্র।

কলেজ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ থেকে ‘তোলা’ চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা কলেজে। প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হলেন ইতিহাস বিভাগের এক অধ্যাপক। অভিযোগ ছাত্রদের একাংশ ও বহিরাগতদের মারে মাথা ফাটে অধ্যাপক রামকৃষ্ণ মণ্ডলের। অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে পাল্টা চতুর্থ সিমেস্টারের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করা হয়েছে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শুক্রবার শোরগোল নদিয়ার শান্তিপুর কলেজে।

আক্রান্ত অধ্যাপকের দাবি, কলেজের পাঁচিল নির্মাণের জন্য পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর নির্দেশে তিনি ওই কাজের দেখাশোনা করতেন। এ নিয়ে শুরু হয় গন্ডগোল। পড়ুয়াদের কয়েক জন এবং বেশ কিছু বহিরাগত তাঁকে মাঝেমধ্যেই ফোন করতেন। টাকা চেয়ে হুমকি আসত। অধ্যাপকের দাবি, তোলাবাজির টাকা চেয়ে তাঁর বাড়ি বয়ে গিয়েও হুমকি দিয়ে আসা হয়েছে। কাজের বরাত তাদের পাইয়ে দেওয়ার জন্য জোর করা হয়েছে। এই বিষয়টি তিনি বিধায়ককে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার ওই একই ‘দাবি’তে কয়েক জন পড়ুয়া তাঁকে গালিগালাজ শুরু করেন কলেজের মধ্যেই। এমনকি, কলেজের কর্মচারীরা তার প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের কয়েক জনকে মারধর করা হয়েছে।

অন্য দিকে, কলেজ গেট অবরুদ্ধ করে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, এক ছাত্রীর হাত ধরে টেনে লাইব্রেরিতে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন ওই অধ্যাপক। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ওই অধ্যাপককে অপসারণ করতে হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে হবে।

এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অধ্যাপক। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত বাজে কথা।’’ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ শুচিস্মিতা সান্যাল। তিনি বলেন, ‘‘এক জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আমি বিশ্বাস করি না। আর আজকের ঘটনা তো ঘটেইনি। কারণ, ওই অধ্যাপক লাইব্রেরিতে যাননি। তিনি স্টাফ রুমে বসেছিলেন। তবে বিষয়টি গভর্নিং বডির সভাপতি এবং থানায় জানানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। এ ক্ষেত্রে শান্তিপুর কলেজের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে তাদের।’’ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথা জানিয়েছেন আক্রান্ত অধ্যাপকের স্ত্রী। ওই অধ্যাপক বলেন, ‘‘পুরোটা সাজানো বিষয়। আমি কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, কোনও ভাবেই যেন সিসি ফুটেজ় নষ্ট না-হয়। শান্তিপুর থানায় চার ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।’’

অধ্যাপককে নিগ্রহের অভিযোগে অভিযুক্তেরা জানিয়েছেন, হট্টগোলের মাঝে অধ্যাপক নিজেই পড়ে যান। দরজায় লেগে মাথায় আঘাত পান তিনি। তাঁর গায়ে কেউ হাত তোলেননি। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি তথা বিধায়ক ব্রজ গোস্বামী জানান, ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকের কী নিয়ে সমস্যা তা তিনি জানেন না। তবে তোলাবাজির কোনও বিষয় এখানে নেই। কারণ, টেন্ডার দেখাশোনা করে অন্য একটি কমিটি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসন খতিয়ে দেখুক। যদি অধ্যাপক দোষী হন, তাঁর শাস্তি হোক। আর যদি ছাত্রেরা অপরাধ করে থাকেন, তাঁরা শাস্তি পাবেন। এ ক্ষেত্রে আলাদা ভাবে কিছু বলার নেই।’’

shantipur college Students Professor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy