Advertisement
E-Paper

বেতন পড়ে অ্যাকাউন্টে, মিলছে মাসে ৫ হাজার

ছিল বেতন জমা পড়ার ‘স্যালারি অ্যাকাউন্ট’। রাতারাতি হয়ে গিয়েছে পুঁচকে ‘টাইনি’ অ্যাকাউন্ট, যা থেকে মাসে মাত্র পাঁচ হাজার টাকার বেশি তোলা যায় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ছিল বেতন জমা পড়ার ‘স্যালারি অ্যাকাউন্ট’। রাতারাতি হয়ে গিয়েছে পুঁচকে ‘টাইনি’ অ্যাকাউন্ট, যা থেকে মাসে মাত্র পাঁচ হাজার টাকার বেশি তোলা যায় না।

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কৃষ্ণনগর প্রধান শাখায় বেশ কিছু অ্যাকাউন্টের এই ভোলবদলের জেরে টাকা তুলতে পারছেন না বহু বেতনভোগী। তার মধ্যে যেমন জেলাশাসকের ব্যক্তিগত সহায়ক রয়েছেন, আছেন বেশ কিছু পুলিশকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীও।

জেলাশাসকের ব্যক্তিগত সহায়ক সত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, “আমার মেয়ে কলকাতায় পড়াশুনো করে। স্ত্রীও থাকেন তার সঙ্গে। এ মাসে পাঁচ হাজার টাকার বেশি তুলতে পারিনি। এক সহকর্মীর কাছ থেকে ধার করে কিছু টাকা পাঠিয়েছি।”

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন)-এর নিরাপত্তারক্ষী শঙ্কর সাহাও একই দুর্ভোগে পড়েছেন। তিনি বলেন, “আমি বাধ্য হয়ে পুরনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে বেতনের টাকা ট্রান্সফার করেছি।” কৃষ্ণনগর পুলিশ লাইনের বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীরও একই অবস্থা। কেউ নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন, তো কেউ পরিচিতদের কাছে হাত পাতছেন আর ব্যাঙ্কে ঘোরাঘুরি করছেন।

মূলত কৃষ্ণনগর প্রধান শাখাতেই এই সমস্যা বেশি। ব্যাঙ্কের বক্তব্য, জেলার সিংহভাগ সরকারি কর্মচারীর স্যালারি অ্যাকাউন্ট ওই শাখায়। তাঁদের মধ্যে যাঁরা সময় মতো নিজের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে ‘কেওয়াইসি ফর্ম’ জমা করেননি, তাঁদের ক্ষেত্রেই এই বিপত্তি হয়েছে। টাইনি অ্যাকাউন্টে ‘কেওয়াইসি’ লাগে না, কোনও টাকা জমা রাখতেও হয় না অর্থাৎ ‘জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’। আবার স্যালারি অ্যাকাউন্টও ‘জিরো ব্যালান্স’। তাই গ্রাহকদের ‘কেওয়াইসি ফর্ম’ মেলেনি, তাঁদের অ্যারাউন্ট ‘টাইনি’ গোত্রে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

আর, তার জেরেই পদে-পদে অপদস্থ হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। যেমন, পেট্রোল পাম্পে এটিএম কার্ড দিতে গিয়ে মহা ফাঁপড়ে পড়ে গিয়েছিলেন টেলিফোন বিভাগের অস্থায়ী কর্মী, গোখড়াপোতার সঞ্জীব দে। তেল নিয়ে দেখেন, এটিএম কার্জ থেকে টাকা কাটানো যাচ্ছে না। অথচ অ্যাকাউন্টে টাকা আছে। পরে ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট ‘টাইনি’ হয়ে গিয়েছে। বিরক্ত মুখে তিনি বলেন, “কেওয়াইসির কারণে কোনও সমস্যা হলে আমাদের জানানো উচিত ছিল। কিছু না জানিয়ে অ্যাকাউন্টের চরিত্র কি ওঁরা বদলে দিতে পারেন?”

কার নির্দেশে বিনা নোটিসে এই ভোলবদল করা হল?

কোনও স্পষ্ট জবাব মেলেনি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, নোট বাতিলের পরে ‘জনধন’-সহ কিছু ‘টাইনি’ অ্যাকান্টে অস্বাভাবিক পরিমাণে পুরনো নোট জমা পড়ছিল। তখন ‘জিরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্টের উপর নজরদারি করতে গিয়েই এই বিপত্তি ঘটেছে। প্রধান শাখার ম্যানেজার নিরঞ্জন কুমার বলেন, “যে সব স্যালারি অ্যাকাউন্টে কেওয়াইসি ফর্ম জমা হয়নি এবং ১০ হাজারের কম টাকা ছিল সেগুলিরই একাংশ ভুলবশত টাইনি অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হয়েছে।”

ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার তপন ভট্টাচার্য বলেন, “এটা নেহাতই একটা ভুল। সার্ভিস ডেক্সকে ওই সব অ্যাকাউন্টের তালিকা পাঠানো হচ্ছে। আশা করি, খুব দ্রুত সামাধান হয়ে যাবে।” তত দিন কি হয়রান হতে থাকবেন গ্রাহকেরা? তপনবাবুর আশ্বাস, টাকা তুলতে যাতে সমস্যা না হয়, সংশ্লিষ্ট শাখাকে সে ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Salary account Tiny Account
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy