Advertisement
E-Paper

সদলবলে কংগ্রেসে সামসুল

গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কাটাকাটির জেরে সাগরদিঘি কেন্দ্র জিতে নিয়েছিল তৃণমূল। তার পর থেকে যত সময় গিয়েছে, কংগ্রেসের পালের হাওয়া হারিয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৪
অবরোধ: লো প্রতিবাদে

অবরোধ: লো প্রতিবাদে

বহু দিন বাদে কংগ্রেসের সভায় ভিড় দেখল সাগরদিঘি। আর, ঘরে ফিরলেন ঘরের ছেলে।

সৌজন্যে, অধীর চৌধুরী।

এবং আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কর্মী-সমর্থকদের যথাসম্ভব তাতানোর চেষ্টা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। তৃণমূলকে ‘লুঠেরাদের দল’ বলে আক্রমণ করতেও ছাড়লেন না।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কাটাকাটির জেরে সাগরদিঘি কেন্দ্র জিতে নিয়েছিল তৃণমূল। তার পর থেকে যত সময় গিয়েছে, কংগ্রেসের পালের হাওয়া হারিয়ে গিয়েছে। বরং গোটা জেলার মতোই তৃণমূলের স্রোতে গা ভাসিয়েছে সাগরদিঘিও। সে দিক থেকে এ দিনের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

তৃণমূলে গিয়েও টিকিট না পেয়ে যিনি গত বিধানসভা ভোটে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং অনেক ভোট কাটেন, সেই সামসুল হোদা রবিবার সাগরদিঘি স্কুলমাঠে অধীরের সভাতেই কংগ্রেসে ফিরলেন। তাঁর সঙ্গে ফিরলেন ৩১ জন পঞ্চায়েত সদস্য। সভায় ছিলেন জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিত মুখোপাধ্যায় এবং স্থানীয় কিছু বিধায়কও। অধীর দাবি করেন, “এই দলবদল সাগরদিঘিতে রাজনীতির অভিমুখ বদলে দেবে।”

বস্তুত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে ৩২ হাজার ভোট পেয়েছিলেন সামসুল হোদা। কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৯ হাজার। অধীরের দাবি, এই ভোট বিভাজনের ফলেই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হয়েও সাগরদিঘিতে ৪৫ হাজার ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। অধীর বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে বিবাদের ফলেই সুযোগ পেয়েছে তৃণমূল। ‘দশের লাঠি, একের বোঝা’— এই আপ্তবাক্য মেনেই কংগ্রেসকে রক্ষা করতে হবে।’’

অভিযোগ করেন, “গোটা রাজ্য জুড়ে লুঠপাট চলছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে কৃতিত্ব নিচ্ছে রাজ্য সরকার। তফসিলি জাতি ও জনজাতির প্রকল্পের টাকায় সাইকেল প্রতি বরাদ্দ ৩৭০০ টাকা। অথচ খরচ হচ্ছে ২১০০ টাকা করে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখানে কন্যাশ্রী চালু করে রাজ্য সরকার ২৫ হাজার টাকা দিচ্ছে ১৮ বছরের পড়ুয়াদের। অথচ কর্ণাটকে একই প্রকল্প ‘গৃহলক্ষ্মী’ নামে, সেখানে রাজ্য সরকার দিচ্ছে এক লক্ষ টাকা। ১৩টা রাজ্যে এই প্রকল্প চালু আছে।”

তৃণমূলের মুসলিম ভোটের কথা মাথায় রেখে সংখ্যালঘু-স্বার্থ নিয়েও নিশানা শানিয়েছেন অধীর। তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যে ২৮ শতাংশ মুসলিমের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘুর সংখ্যা মাত্র ১.৫৭ শতাংশ। অধীরের টিপ্পনী, “এর পরেও তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সরকার সংখ্যালঘুদের প্রভূত উন্নতি করেছে।’’ অধীরের বক্তব্য, ‘‘১.৪৫ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা। অথচ দেশের ১১৫টি পিছিয়ে পড়া জেলার মধ্যে রাজ্যের যে ৫টি জেলা রয়েছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদ তার মধ্যে এক নম্বরে।”

সরকারের ইশারায় পুলিশের ওঠাবসা নিয়ে আগেও নানা মন্তব্য করেছেন অধীর। এ দিন তিনি দাবি করেন, “তৃণমূলের পালোয়ানি চলছে পিছনে পুলিশ আছে বলে। ওসি থেকে এসপি সকলেই তৃণমূলকে টিকিয়ে রেখেছেন। বিরোধী দলের চোরেরাও এখন সব তৃণমূলে।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘হেলমেট নেই, সিভিক ভল্যান্টিয়ার পয়সা তুলছে। গরু পাচার হচ্ছে, পুলিশ পয়সা তুলছে।’’

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে যে কংগ্রেস একেবারে জমি ছেড়ে দেবে না, এ দিনের সভা সম্ভবত তারই ইঙ্গিতবাহী।

Samsul Hooda Congress Adhir Chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy