Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শান্তিপূর্ণ ভোট কারে কয়, বুঝিয়ে দিল স্কুলপড়ুয়ারা

ফরাক্কার বটতলায় নুর জাহানারা স্মৃতি হাই মাদ্রাসায় শিশু সংসদ গঠনে এবারই প্রথম নির্বাচনের ধাঁচে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

বড়দের ভোটে বোমাবাজি, হানাহানির ঘটনা আকছার ঘটে। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বোমাবাজির গ্রাম বলে পরিচিত সেই মহেশপুরেই শুক্রবার ছোটরা ‘ভোট দিল’ শান্তিপূর্ণ ভাবে। ভোটের আগে এই ভোট ঘিরে শুক্রবার এলাকায় উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। ছ’টি আসনের মাদ্রাসার শিশু সংসদ গঠনের জন্য এদিন ভোট দিল ৭৫ শতাংশ পড়ুয়া।

ফরাক্কার বটতলায় নুর জাহানারা স্মৃতি হাই মাদ্রাসায় শিশু সংসদ গঠনে এবারই প্রথম নির্বাচনের ধাঁচে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মাদ্রাসার ৭০৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ভোট দিয়েছে ৫৩১ জন পড়ুয়া। ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে ছ’জনকে বেছে নিয়েছে তারা। তবে ভোটপত্রে আসল নির্বাচনের ধাঁচেই প্রত্যেক প্রার্থীর ছবি এবং প্রতীক ছিল। প্রার্থীদের কারও প্রতীক ছিল বই কারও পেন। কারও বা চেয়ার, টেবিল। প্রার্থীদের মধ্যে ছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী মাহিনুর বেগমও। ভোটপত্রের ক্রমতালিকায় দু’নম্বরে নাম থাকা মাহিনুরের প্রতীক ছিল কলম। বাবা আব্দুল হাই গ্রামীণ চিকিৎসক। এতদিন স্কুলে ভোট মানে পরিচালন কমিটির বৈঠকই বুঝতেন তিনি। মেয়ে প্রার্থী হয়েছে শুনে মুখে একগাল হাসি আব্দুলের।

মাহিনুর বলল, “ক্লাসের বন্ধুরাই বলল, ভোটে দাঁড়াতে। টিফিনে প্রতিটি ক্লাসে গিয়ে প্রতীক দেখিয়ে ভোট চেয়েছি। জিতব বলেই বিশ্বাস। কিন্তু ভোট কত পাব, সেটাই দেখতে চাই।’’ প্রার্থী হয়েছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া আখতার জামাল শেখও। তার প্রতীক বই। জামালের কথায়, “ভোটে দাঁড়িয়ে কীরকম লাগছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সত্যি ভোটে গ্রামে গ্রামে অশান্তি, বোমাবাজি হয়। আমাদের ভোট কেমন নির্বিঘ্নে হল। ভোট শেষ করে মিডডে মিলের খাওয়াদাওয়া সেরেই বাড়ি ফিরেছি।”

অন্যদিকে, কোন প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে, অনেক পড়ুয়াই তা জানাতে চাইল না। বুথ থেকে বেরিয়ে আসা মহম্মদ রেকাব আলিকে এ নিয়ে প্রশ্নটা করতেই তার ঝটিতি উত্তর “এটা টপ সিক্রেট। তবে ভোট দিয়েছি ভেবেচিন্তেই।’’ প্রার্থীদের যোগ্যতার মাপকাঠি কী ছিল? তার জবাব, “ব্যবহার, পড়াশোনায় আগ্রহ, স্কুলে নিয়মিত কি না, সেই সব খোঁজখবর নিয়েই ভোট দিয়েছি।”

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জানে আলম জানান, মহেশপুর বটতলায় ভোটের সময় সংঘর্ষ, বোমাবাজি আকছার ঘটে। গত বছর শিশু সংসদ গড়েছিলাম শিক্ষকরাই। স্বচ্ছ নির্বাচন কেমন হয়, তা বোঝাতেই এ বার ভোটের মাধ্যমে সংসদ গড়ে তোলা হল।’’

শিক্ষিকা পায়েল মুখোপাধ্যায় বললেন, বোলপুরের এক স্কুলে পড়তাম। সেখানে একবার এভাবে স্কুল সংসদ গড়া হয়েছিল। ফের সেই স্মৃতি উস্কে দিল এই ভোট।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elections Farakka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE