Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে গিয়েও মেলেনি টাকা, কংগ্রেসে ‘ওয়াপসি’

দল বদল করলে এক দিনের মধ্যে মিলবে ঢালাই রাস্তা তৈরির দু’কোটি টাকা। এই প্রতিশ্রুতি শুনে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন নওদার কেদারচাঁদপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ছয় সদস্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৮

দল বদল করলে এক দিনের মধ্যে মিলবে ঢালাই রাস্তা তৈরির দু’কোটি টাকা। এই প্রতিশ্রুতি শুনে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন নওদার কেদারচাঁদপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ছয় সদস্য। তার পরে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও টাকা মেলেনি। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের একাংশের সঙ্গে পরামর্শ করে তাই পুরনো দলেই ফিরে এলেন সকলে।

গত সোমবার স্থানীয় গঙ্গাধারী এলাকায় এক সভায় জেলা যুব তৃণমূল নেতা সৌমিক হোসেনের হাত তৃণমূলের পতাকা নিয়ে দল বদল করেছিলেন ওই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান সৌমেন্দ্রনাথ রায় এবং পাঁচ সদস্য। শুক্রবার সৌমেন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আমরা ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার কাজ করিয়েছিলাম। তার দরুণ সরকারি নিয়মেই টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা তা পাইনি। তাই ফিরলাম।’’

ওই গ্রামেরই বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন আরএসপি প্রধান আনন্দমোহন বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘প্রধান ও অন্য সদস্যেরা নিজেদের স্বার্থেই তৃণমূলে গিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের বেশির ভাগই ওঁদের দল বদল মানতে পারেননি। মানুষের ক্ষোভ বুঝে ওঁরা আবার আগের দলে ফিরে এসেছেন।’’

কেন এই ‘ঘর ওয়াপসি’?

এমনিতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৬০ টাকার মাটি কাটার কাজ হলে ৪০ টাকা পঞ্চায়েতের প্রাপ্য। কিন্তু ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মাটি কাটার কাজ হলেও কোনও টাকা পায়নি কেদারচাঁদপুর ১ পঞ্চায়েত। তৃণমূল প্রচার চালায় যে পঞ্চায়েত তাদের হাতে এলেই তড়িঘড়ি উন্নয়নের টাকা মিলবে। এরই মধ্যে দুই কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশও তৃণমূলের প্রচার বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা কেউ-কেউ তা পঞ্চায়েত কর্তাদেরও বলতে থাকেন।

পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, ‘‘তৃণমূল ঢালাই রাস্তা নির্মাণের জন্য দু’কোটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি আমাদের ডেকে তা বলেছিলেন। উন্নয়নের স্বার্থেই আমরা ছ’জন দলবদল করি।’’ কিন্তু তার পরেও টাকা না মেলায় এলাকার লোকজন আবার বেঁকে বসেন। ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সৌমেন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘তিনটে দিন পেরিয়ে গেলেও টাকা মেলেনি। এই অবস্থায় গ্রামবাসীদের অনেকেই আগের দলে ফিরতে অনুরোধ করেন।’’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক আবু তাহের খানের উপস্থিতিতে তাঁরা দলে ফেরেন।

আবু তাহেরের অভিযোগ, ‘‘এই ভাবেই সারা জেলায় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কংগ্রেস ভাঙাচ্ছে তৃণমূল। এই খেলা এ বার বন্ধ হবে।’’ অভিযোগের তির যাঁর দিকে, সেই নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলার কৃষি কর্মাধক্ষ মোসারফ হোসেন অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কাজের উপরে টাকা পাওয়ার অনুপাত নির্ভর করে। নিয়ম মেনেই কেদারচাঁদপুর ১ পঞ্চায়েত টাকা পাবে। টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপার নেই। ওই প্রধানের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গিয়েছে বলেই এ সব ভিত্তিহীন কথা বলছে।’’

সৌমিক হোসেন আবার দাবি করেন, ‘‘ওই ছ’জনকে দলে নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অনেকেই। তাঁদের অসন্তোষকে গুরুত্ব দিয়েই ওঁদের বহিষ্কার করা হয়। এর পরেই ওঁরা কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন।’’

Members Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy