Advertisement
E-Paper

খেলার মাঠে আবর্জনা, ধানের চারা পুঁতে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের

দেশ জুড়ে স্বচ্ছ ভারত অভিযান চলছে। রাজ্যে চলছে নির্মল বাংলা অভিযান। দিনকয়েক আগে স্বাধীনতা দিবসে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঝাঁটা হাতে প্রশাসনের কর্তারা সাফাই অভিযানেও নেমেছিলেন। সেই মুখ্যমন্ত্রীরই দলের কর্মিসভার পরে মাঠ ভরা আবর্জনার স্তূপ দেখে শিউরে উঠল ফরাক্কা। নিজেদের কলেজের খেলার মাঠের দুরবস্থা দেখে শুক্রবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন ফরাক্কার সৈয়দ নুরুল হাসান কলেজের পড়ুয়ারা।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৫ ০০:১৮
প্রতিবাদ এ ভাবেই। অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

প্রতিবাদ এ ভাবেই। অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

দেশ জুড়ে স্বচ্ছ ভারত অভিযান চলছে। রাজ্যে চলছে নির্মল বাংলা অভিযান। দিনকয়েক আগে স্বাধীনতা দিবসে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঝাঁটা হাতে প্রশাসনের কর্তারা সাফাই অভিযানেও নেমেছিলেন। সেই মুখ্যমন্ত্রীরই দলের কর্মিসভার পরে মাঠ ভরা আবর্জনার স্তূপ দেখে শিউরে উঠল ফরাক্কা। নিজেদের কলেজের খেলার মাঠের দুরবস্থা দেখে শুক্রবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন ফরাক্কার সৈয়দ নুরুল হাসান কলেজের পড়ুয়ারা। প্রতিবাদে ওই মাঠের মধ্যে তাঁরা ধানের চারাও পুঁতলেন।
কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার এই মাঠেই তৃণমূল প্রকাশ্য জনসভা করেছে। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। ছাত্রদের অভিযোগ, সেই সভার পরে আর মাঠ পরিষ্কারের সময় পাননি কেউই। শুক্রবার সকালে মাঠে এসে কলেজের পড়ুয়ারা দেখেন, মাঠের একদিকে বিশাল প্যান্ডেল বাঁধা। সারা মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে উচ্ছিষ্ট, ব্যবহৃত থার্মোকলের থালা, গ্লাস। পড়ে আছে অজস্র লোহার পেরেক। বৃষ্টি ভেজা মাঠে শতাধিক গাড়ি দাপিয়ে বেড়ানোর ফলে খেলার মাঠ খেতের চেহারা নিয়েছে। এরপর কলেজের তালা খুলতেই কলেজের পড়ুয়ারা মাঠে নেমে কাদা ভরা মাঠে ধানের চারা রোয়া শুরু করেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষও খেলার মাঠের এই পরিণতি দেখে তাঁদের ক্ষোভ গোপন করেননি। এই কলেজেই রয়েছে ছাত্রদের হস্টেল। প্রতিদিন সকাল–বিকেল এই কলেজ মাঠে নিয়মিত খেলাধুলো করেন প্রায় শ’দুয়েক ছেলে। প্রথম বর্ষের ছাত্র দেবাশিস বিশ্বাসের কথায়, ‘‘গোটা মাঠে অসংখ্য গর্ত। প্যান্ডেল খোলার সময় লোহার পেরেক মাঠের মধ্যেই ফেলার ফলে বিপজ্জনক অবস্থা হয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় মাঠ আর খেলার অবস্থাতে নেই।’’ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরমেশ্বর সোরেন বলেন, ‘‘১২০ মিটার লম্বা ও ৯০ মিটার চওড়া এমন ঘাস বিছানো মাঠ জেলার মধ্যে খুব কম আছে। এর আগেও তো তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল সভা করেছে এই মাঠে। কিন্তু মাঠের এমন দুরবস্থা এর আগে কখনও হয়নি। আমরা চাই মাঠ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’
কলেজ পড়ুয়াদের একাংশ জানান, সভা করার মতো এই এলাকায় অনেক ফাঁকা জায়গা রয়েছে। কিন্তু খেলার মাঠের সংখ্যা খুবই কম। কলেজ কর্তৃপক্ষের উচিত, খেলা ছাড়া অন্য কিছুর জন্য এই মাঠটি ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়া। কলেজের অধ্যক্ষ শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের যে নেতারা মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, তাঁদের ফোন করে জানিয়েছি মাঠটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। তাঁরাও কথা দিয়েছেন মাঠ ঠিক করে দেওয়ার।’’

ফরাক্কা কলেজের এক কর্মী জানান, সরকারি সাহায্যে বাম আমলে বহু কষ্ট করে মাঠটি তৈরি করতে হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই মাঠের জন্য বার বার আবেদন করেও কানাকড়ি সরকারি সাহায্য মেলেনি। স্টেডিয়াম তৈরির কাজ মাঝ পথে আটকে রয়েছে অর্থাভাবে। এই জেলায় এত সুন্দর মাঠ খুব কম রয়েছে। আন্তঃজেলা বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। এর আগেও এই মাঠে সভা করেছে তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল। কিন্তু মাঠের এমন বেহাল অবস্থা এর আগে কখনও হয়নি। বারবার তৃণমূলের নেতাদের বৃষ্টির দিনে মাঠে গাড়ি নামাতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু কেই সে কথা শোনেননি। আর তার ফলেই মাঠের এমন দশা হয়েছে। সেই সঙ্গে আবর্জনা তো রয়েইছে।

ফরাক্কার বাসিন্দা তথা জেলা তৃণমূলের সহকারি সভাপতি সোমেন পাণ্ডে জানান, বৃহস্পতিবার সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর সভা শেষ হতে রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই মাঠ সাফাইয়ের কাজ শুরু করা যায়নি। বৃষ্টির দিন বলেই এই অবস্থা হয়েছে। ফরাক্কা ব্লক তৃণমূলে সভাপতি সাহাজাদ হোসেন বলেন, ‘‘আমরাও চাই না মাঠের ক্ষতি হোক। দু’-তিন দিনের মধ্যেই মাঠ পরিষ্কার করে দেব।’’

Student Farakka College trinamool suvendu adhikari barhampur murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy