Advertisement
E-Paper

মোবাইল নিয়ে মত্ত, খড়গ্রামে ঝুলে মৃত্যু পড়ুয়ার

পারিবারিক সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পাশ করার বাবার কাছ থেকে একটি দামি স্মার্টফোন আদায় করেছিল অরূপ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

স্মার্টফোনই ধ্যানজ্ঞান ছিল তার। মোবাইল ছেড়ে বাইরে খেলতেও বেরোত না সে।

বুধবার সকালে জলখাবার খেয়ে ‘উপরের ঘরে পড়তে যাচ্ছি’ বলে উঠে গিয়েছিল ক্লাস ইলেভেনে পড়া ছেলেটা। ঘণ্টা দেড়েক পরে সেই ঘর থেকেই পাওয়া গেল ঝুলন্ত দেহ।

নাম অরূপ ঘোষ (১৭)। বাড়ি খড়গ্রামের রায়পুর গ্রামে। কান্দি রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল সে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সে আত্মঘাতী হয়েছে। তবে কেন এমন ঘটল, বাড়ির লোকেরা তা বুঝে উঠতে পারছেন না। ইদানীং সে মোবাইলে নানা রকম গেম খেলত বলে জানিয়েছেন তার বাবা। পুলিশ মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে কোনও মারণ গেম বা অন্য কোনও অনলাইন খেলার জালে সে জড়িয়েছিল কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পারিবারিক সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পাশ করার বাবার কাছ থেকে একটি দামি স্মার্টফোন আদায় করেছিল অরূপ। বাড়ির দোতলায় একটি ঘরে একাই থাকত সে। সম্প্রতি সে সর্বক্ষণ মোবাইল নিয়েই পড়ে থাকত। স্কুল এবং টিউশনে যাওয়া ছাড়া সে বাড়ির বাইরে বেরোত না। পড়াশোনাও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল ইদানীং। মাঝরাতে মোবাইল নিয়ে ছাদে চলে যেত।

অরূপের বাবা অজিত ঘোষের দাবি, ছাদে নিরিবিলিতে বসে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলত সে। গত শুক্রবার তিনি ছাদে গিয়ে দেখেন, মোবাইলে গেম খেলছে ছেলে। সেই গেমে এক জন নিজেই নিজেকে নানা ভাবে রক্তাক্ত করছে। এই দেখেই তিনি মোবাইল কেড়ে নেন। তাতে রেগে গিয়ে অরূপ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। সোমবার ব্যবসার কাজে কলকাতা যাওয়ার আগে ছেলেকে মোবাইলটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরে সে খাবার মুখে তোলে।

অরূপের মা পূরবী ঘোষও বলেন, “মোবাইল হয়ে গিয়েছিল ওর জীবন। পড়ছে কি না দেখতে দোতলার ঘরে গিয়ে দেখতাম, ও মোবাইলে ভূতের সিনেমা দেখছে।” অজিত বলেন, ‘‘মোবাইলে গেম খেলতেও অনেক বারণ করতাম। কিন্তু শোনেনি ও।” তাঁর সন্দেহ, ‘ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ’ জাতীয় কোনও মারণ খেলায় জড়িয়েছিল ছেলে, যার শেষ ধাপ আত্মহত্যা। এই রকম সন্দেহ সম্প্রতি আরও কয়েকটি ঘটনায় দানা বেঁধেছে। যদিও কোনও ক্ষেত্রেই তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ‘ব্লু হোয়েল’ বস্তুত কোনও ‘গেম’-ও নয় সেই অর্থে। তা ডাউনলোডও করা যায় না। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে কোনও গোপন গ্রুপ থেকে খেলুড়েকে নির্দেশ দেয় খেলার পরিচালক। ফেসবুক বা এ দেশে চালু কোনও নেটওয়ার্কে এ রকম গ্রুপ চালু থাকার প্রমাণ এখনও মেলেনি। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্পর্কের্র টানাপড়েনের কথাই শেষ পর্যন্ত সামনে এসেছে।

যে কারণেই এ ঘটনা ঘটে থাকুক, এক মাত্র ছেলের মৃত্যুতে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন অরূপের বাবা-মা। কারণ বুঝে উঠতে পারছেন না তার বন্ধু, শিক্ষক, সহপাঠী বা পাড়ার লোকেরাও। পুলিশ জানায়, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Dead Mobile Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy