E-Paper

ভিন্ রাজ্যে যাওয়া নিয়ে শাঁখের করাতে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক

খোদ দেশের রাজধানী দিল্লিতে অত্যাচারিত হয়েছে বাঙালি শ্রমিক। তা ছাড়াও গুজরাট, উত্তর প্রদেশ মধ্যপ্রদেশেও আক্রান্ত হয়েছে বাঙালি।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

করোনা কালে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে গোটা দেশের রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল। ‘পরিযায়ী শ্রমিক তুমি কার’ বোঝাতে আদা জল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছিল শাসক থেকে বিরোধী দলগুলো। তাছাড়া ভোটের সময় এলেও তাঁদের একটু কদর বাড়ে। ফোনে খোঁজ নেওয়া হয় তাঁদের ‘আমি তোমাদেরই লোক’ বোঝাতে। পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গেও দুহাত জড়ো করে দেখা করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল এরা যে তাদের কর্মসংস্থান হবে। এমনকি তাদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ভর্তুকিও দেওয়ার ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে দাবি। অথৈ জলে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরে যেতে হয়েছে সেই ভিন্-রাজ্যে। আর সেখানে গিয়েই নতুন করে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের। বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হয়েছে অনেক শ্রমিককে। মারধর করা হয়েছে নিরীহ অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দূরের কথা। ভারতীয় পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশী বলে অভিযোগ।

খোদ দেশের রাজধানী দিল্লিতে অত্যাচারিত হয়েছে বাঙালি শ্রমিক। তা ছাড়াও গুজরাট, উত্তর প্রদেশ মধ্যপ্রদেশেও আক্রান্ত হয়েছে বাঙালি। ছাড় মেলেনি প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশাতেও। সেখানেও প্রায় আক্রান্ত হচ্ছে বাঙালি শ্রমিক। বিশেষ করে এর রাজ্য থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ফেরি করা হকারদের উপরে নানা সময় নেমে এসেছে অত্যাচার। দিন কয়েক আগেও জলঙ্গির রাহুল ইসলাম নামের এক যুবকের উপরে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তার একটা ভাইরাল ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্য জুড়ে। যে ছবি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি বিদ্বেষ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, তা রাহুল ইসলামের ওই ভাইরাল ভিডিও দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে বাঙালির কাছে। এখানেই শেষ নয়, সেখানকার পুলিশের কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে তাদের। সটান বলে দেওয়া হয়েছে নিজের রাজ্যে চলে যাও।’’

তবে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব যাই বলুক না কেন শাসকদলের নিচু তলার নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত করুন। রাহুল ইসলামের মা নুরনাহার বিবি বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ বলে আমাদের হয়ে কেউ বলার নেই। কেবল ভোটটা নেওয়ার সময় আমাদের কথা মনে পড়ে নেতাদের। আমার ছেলেটাকে নির্মম ভাবে মারধর করার পরে রাজনৈতিক দলের নেতারা কেউ একবার এল না তার সঙ্গে দেখা করতে।’’ সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ মালদহে জনসভায় এসে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের অত্যাচার নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য বাংলাদেশি সন্দেহে ভিন্-রাজ্যে হেনস্থা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, গুজরাট, রাজস্থানে অত্যাচার করছে। আমরা এর জবাব চাই, জবাব দিতে হবে। বাংলা ভাষায় কথা বলব। গলা কেটে দিলেও বাংলায় কথা বলব।’’ এ ছাড়াও এসআইআর প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, "এসআইআরের ফর্ম ভর্তি করবেন। শুনানিতে যোগ দেবেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরতে বলুন। অন্য রাজ্যে নাম থাকলে নাম কেটে দেব। সে রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Domkal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy