Advertisement
১৯ মে ২০২৪
CPIM

CPIM: কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুমিত, প্রশ্ন জেলা সম্পাদকের পদে

পুরভোটে রাজ্যে একমাত্র নদিয়ার তাহেরপুরেই নিজেদের দুর্গ অটুট রাখতে পেরেছে সিপিএম। তার কৃত্বিত্ব কিছুটা জেলা সম্পাদকের উপরেও বর্তায়।

সুমিত দে।

সুমিত দে। নিজস্ব চিত্র।

সম্রাট চন্দ
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৩২
Share: Save:

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে গেলেন দলের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে। এর ফলে তাঁকে যদি জেলা সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয় সেই শূন্য স্থানে কে বসবে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক সঙ্গে সর্বাধিক দু’টি স্তরের কমিটির সদস্য থাকা যায়। সুমিত এত দিন জেলা কমিটি ছাড়াও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। এখন কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাঁর জেলা কমিটির সদস্যপদ ছাড়তে হতে পারে। এর আগে একই রকম পরিস্থিতিতে পলিটব্যুরোর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে গৌতম দেবকে তিনটি কমিটিতেই রাখার নজির রয়েছে। তবে সেটা নিতান্তই ব্যতিক্রম।

এক দশক আগে, রাজ্যে সিপিএম ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ‘কঠিন সময়ে’ সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ছাত্র সংগঠন থেকে উঠে আসা কল্যাণীর সুমিত দে। আটের দশকের শেষ থেকে নয়ের দশকের গোড়ার দিক পর্যন্ত এসএফআইয়ের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ সুমিত বিশ্ববিদ্যালয়েও এসএফআইয়ের বিভিন্ন ইউনিটের নানা দায়িত্ব সামলেছেন। ডিওয়াইএফের কল্যাণী জোনাল সম্পাদকের পদেও ছিলেন কিছু দিন। পরে দলের শাখা স্তর থেকে শুরু করে কল্যাণী লোকাল এবং জোনাল কমিটির সম্পাদক হন এবং দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে আসেন। ২০১২ সালে আশু ঘোষের জায়গায় তিনিই হন সিপিএমের জেলা সম্পাদক। এর কয়েক বছরের মধ্যেই জায়গা পান দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। এবার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেন।

সম্প্রতি বিধানসভা ভোটে রাজ্যে খালি হাতে ফিরেছে বামেরা। ঘটনাচক্রে, পুরভোটে রাজ্যে একমাত্র নদিয়ার তাহেরপুরেই নিজেদের দুর্গ অটুট রাখতে পেরেছে সিপিএম। তার কৃত্বিত্ব কিছুটা জেলা সম্পাদকের উপরেও বর্তায়। এখন তাঁকে যদি জেলার চালকের পদ ছাড়তে হয়, তবে সেই পদে কে বসবেন তা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই কৌতূহল তৈরি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জেলা সম্পাদক হিসেবে একাধিক নামও ঘোরাফেরা করছে।

সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে আছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমানে সিটু-র জেলা সম্পাদক এস এম সাদি। তিনি দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক রমা বিশ্বাসও রয়েছেন। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী রমা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীরও সদস্য। আছেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য, জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মেঘলাল শেখ। বর্তমানে কৃষক সভার জেলা সম্পাদক তিনি। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা খেতমজুর সংগঠনের জেলা সম্পাদক পদে আছেন সুকুমার চক্রবর্তী। তবে এঁদের ক্ষেত্রে বয়স একটা প্রতিবন্ধকতা হতে পারে।

আবার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে আছেন প্রাক্তন সাংসদ অলকেশ দাস। এক সময়ে ডিওয়াইএফের নানা দায়িত্ব পালন করে আসা অলকেশ বর্তমানে সামাজিক ন্যায় মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক। আবার ডিওয়াইএেএর প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সুমিত বিশ্বাসও আছেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে। তুলনামূলকভাবে এঁরা বয়সে তরুণ। সিপিএম বর্তমানে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনার এবং ষাটোর্ধ্বদের বিশ্রাম দেওয়ার নীতি নিয়ে চলছে। সুমিত দে যদি জেলা সম্পাদক পদে না-থাকতে পারেন, সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা না তারুণ্য, সিপিএম কাকে গুরুত্ব দেয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE