Advertisement
E-Paper

প্রাণ কাড়ল সোয়াইন ফ্লু

গত ২৯ এপ্রিল মৃত্যু হয়েছিল কল্যাণী ওল্ড হাউজিং-এর বাসিন্দা সীমা ঘোষের। বছর ছাব্বিশের ওই তরুণীও মারা গিয়েছিলেন কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে, যেখানে রামকৃষ্ণবাবু ভর্তি ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ০২:১৮

সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে ফের কল্যাণীতে মৃত্যু হল এক জনের।

রবিবার রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান কল্যাণী ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ রায় (৬৫)। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন আধিকারিক তিনি। তাঁর রক্তে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস (এইচ১এন১) মিলেছিল। এই নিয়ে নদিয়ায় সোয়াইন ফ্লু-তে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিন। তার মধ্যে দু’জনেই কল্যাণীর বাসিন্দা।

গত ২৯ এপ্রিল মৃত্যু হয়েছিল কল্যাণী ওল্ড হাউজিং-এর বাসিন্দা সীমা ঘোষের। বছর ছাব্বিশের ওই তরুণীও মারা গিয়েছিলেন কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে, যেখানে রামকৃষ্ণবাবু ভর্তি ছিলেন। সীমার মৃত্যুর দিন কয়েক আগে তাহেরপুরের এক শিশুরও মৃত্যু হয়েছিল সোয়াইন ফ্লু-তে। সোহম ঘোষ নামে বছর চারেকের শিশুটিকে কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল।

সীমা যে এলাকার বাসিন্দা, সেটি মূল কল্যাণী শহরের কিছুটা বাইরে। সেই এলাকায় প্রচুর শুয়োর ঘোরাঘুরি করে। তাঁর মৃত্যুর পরে বিষয়টি নিয়ে প্রচুর হইচইও শুরু হয়েছিল, কেননা শুয়োরই সোয়াইন ফ্লু-র প্রধান বাহক। পুরসভা কয়েকটি এলাকায় শুয়োর ধরতে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ এলাকায় শুয়োর ধরা যায়নি। শুয়োর পালকদের থেকে বাধা এসেছিল। তা ছাড়া, শুয়োর রাখার পরিকাঠামোও পুরসভার নেই।

রামকৃষ্ণবাবু কল্যাণী শহরের বি-১ এলাকার বাসিন্দা। সেটি শহরের অভিজাত এলাকা হিসেবেই পরিচিত। সেখানেকার বাসিন্দাদের বড় অংশের বক্তব্য, অবাধে শুয়োর চরে বেড়ায়। জেএনএম হাসপাতাল এবং কর্মীদের আবাসনও প্রচুর শুয়োরের চারণক্ষেত্র।

সত্যি বলতে, হাসপাতালে শুয়োর শুধু কল্যাণীতেই নেই। এ ব্যাপারে কুখ্যাত মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালও। অনেক সময়েই তারা হাসপাতালের পিছনের দিক থেকে একেবারে জরুরি বিভাগের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকছে। কান্দির পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতালও শুয়োরের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। আশপাশে গ্রামাঞ্চলেও অনেকে শুয়োর পালন করে। সেগুলি পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়, যেখানে সেখানে নোংরা করে।

রামকৃষ্ণবাবুর শ্যালক সুবিমল চন্দ্র জানান, গত ২২ মে শ্বাসকষ্ট নিয়ে কল্যাণীর একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন রামকৃষ্ণবাবু। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরের দিনই তাঁকে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরের দিন তাঁর রক্তে এইচ১এন১ ভাইরাস ধরা পড়ে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তার উপদ্রবে তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে। টানা ১৮ দিন চিকিৎসা চলার পরে রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ার পরেই হাসপাতাল থেকে ই-মেলে কল্যাণী পুরসভাকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। পুরপ্রধান সুশীল তালুকদার জানান, রামকৃষ্ণবাবুদের এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। পুরকর্মীরা জীবানুনাশক ধোঁয়া ছড়িয়েছেন। শুয়োর ধরা হচ্ছে না কেন? পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের মাধ্যমে হরিণঘাটা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের খামারে শুয়োর রাখার আবেদন জানাব। তা না হলে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। অবিলম্বে শুয়োর ধরা হবেই।’’ কল্যাণী মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’

Swine Flu সোয়াইন ফ্লু Kalyani জেএনএম হাসপাতাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy