পুলিশ পাহারা বসলেও গুলি-কাণ্ডের কিনারা না হওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলেকে বাড়িতে ফেরাতে ভয় পাচ্ছেন বাবুরহাটের বাসিন্দা সিপিএম কর্মী সজল খাসনবিস। বৃহস্পতিবার রাতে সজলবাবুর বাড়ি লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুলি কারও গায়ে না লাগলেও দরজা ভেদ করে দেওয়ালে লাগে। ঘটনার জেরে শনিবার ওই বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়। সোমবার বিকেলেও ওই পাহারা জারি রয়েছে।
তবে কেউ গ্রেফতার না হওয়াতে নিছক পাহারাতে আতঙ্ক কাটছে না ওই পরিবারের। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে একমাসের বেশি সময় থেকে রায়গঞ্জ, নবদ্বীপে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে তার বাড়ি আসার কথা থাকলেও গুলির ঘটনার জেরে তা পিছিয়ে গিয়েছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে পুলিশ না ধরা পর্যন্ত উদ্বেগ কমবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সজলবাবু। সোমবার বিকেলে সজলবাবু বলেন, “তিনদিন পরেও কারা গুলি চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়, কেউ ধরাও পড়েনি। তাই পুলিশ পাহারা থাকলেও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলেকে এখনই বাড়িতে ফেরানোর ঝুঁকি নিতে চাইছি না।”
পুলিশ সূত্রের খবর, সজলবাবু পেশায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কর্মী। বরাবর সিপিএমের কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত। সেই সূত্রেই এবার বিধানসভা নির্বাচনে নাটাবাড়ি কেন্দ্রের আওতাধীন স্থানীয় রামকৃষ্ণ বয়েজ হাইস্কুলের ১৩৯ নম্বর বুথে পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব সামলান। ভোটের দিন রাতেই তার বাড়ি লক্ষ করে দু-রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। একটি গুলির খোল পুলিশকে দেন। শুক্রবার পুরো বিষয়টি জানিয়ে কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের জেরে পুলিশ আইপিসির ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। সেইসঙ্গে অস্ত্র আইনের ধারাতেও ওই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশের তরফে অবশ্য নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীলকুমার যাদব বলেন, “ওই ব্যক্তির বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। এলাকায় পুলিশের মোবাইল ভ্যান নজর রাখছে। পুরো বিষয়টির কিনারা করার ব্যাপারে সবরকম চেষ্টা হচ্ছে।”
সিপিএমের অভিযোগ, পুলিশ বৃহস্পতিবারের গুলির ঘটনার পরে বারবার চেষ্টার আশ্বাস দিলেও ঘটনার কিনারা হয়নি। ভোটের আগেও তৃণমূলের লোকেরা সজলবাবুকে হুমকি দিয়েছিল। ফলে গুলির ঘটনার জেরে এলাকায় বাড়তি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হুমকিতে অভিযুক্তদের কললিস্ট যাচাই করা হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করার পর প্রয়োজনে গুলির নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy