নিজস্ব চিত্র।
তাজমিরার জেদের কাছে হার মানল তাঁর শ্বশুরবাড়ি।
টানা চার দিন পরে সোমবার সকালে তাজমিরা শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে পেরেছেন। তাঁর শ্বশুর এখনও পলাতক। তবে এ দিন শাশুড়ি এসে ঘরের তালা খুলে দিয়েছেন। তাজমিরা বলছেন, ‘‘দাঁতে দাঁত চেপে এই ক’টা দিন যে কী ভাবে কাটিয়েছি তা উপরওয়ালাই জানেন। শেষ পর্যন্ত স্বামীর ভিটেয় ফের ফিরতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে অনেক।’’
তাজমিরার এই জয়ে খুশি ডোমকলের বিলাসপুরও। গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাজমিরা অত্যন্ত ভাল মেয়ে। তাঁর প্রতি কোনও অবিচার কিছুতেই তাঁরা মেনে নেবেন না। তাজমিরার শাশুড়ি পুলিশের চাপে বাধ্য হয়ে ঘরের তালা খুলে দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও তাজমিরা যাতে কোনও ভাবেই বিপদে না পড়েন, সে দিকেও নজর রাখবেন তাঁরা।
ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলছেন, ‘‘ওই মহিলাকে ঘরে ফেরাতে পেরে আমরাও খুশি। তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে। যোগাযোগ করা হচ্ছে কেরলের পুলিশের সঙ্গে।’’ তাজমিরার অভিযোগও গুরুতর।
পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামী কেরলে হোটেল চালায়। ওই ব্যবসার আড়ালে সেখানে দেহব্যবসাও চলে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তাঁকে জোর করে সেখানে যাওয়ার জন্য। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ির বাইরে বের করে দেয় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তারা দরজায় তালা দিয়ে চলে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জল-ঝড়ের রাতে মেয়েটা একা বাড়ির বাইরে পড়েছিলেন। সকালে উঠে তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। তার পর থেকে তাঁরাই সকাল-বিকেল-রাতে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আশ্রয় দিতে চাইলে তাজমিরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘মরতে হলে এখানেই মরব। কিন্তু এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’
তাজমিরার পড়শিরা বলছেন, ‘‘মেয়েটার মনের জোর আছে বটে। যা বলেছিল, তাই করে দেখাল। তবে আমরাও ওর পাশে আছি।’’ শনিবার তাজমিরা তাঁর দাদাকে নিয়ে ডোমকল থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসেন। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশও। এ দিন পুলিশের চাপেই তাজমিরার শাশুড়ি দরজার তালা খুলে দিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy