Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সাফল্য বায়োমেট্রিক হাজিরায়

বেড়েছে হাজিরা, শূন্যে ঠেকেছে ‘অফ পিরিয়ড’

প্রায় সাড়ে তিন হাজার পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক সাকুল্যে জনা ত্রিশ। তাও সকলে যে নিয়মিত স্কুলে আসতেন তা নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:২৪
Share: Save:

প্রায় সাড়ে তিন হাজার পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক সাকুল্যে জনা ত্রিশ। তাও সকলে যে নিয়মিত স্কুলে আসতেন তা নয়।

ফলে দিনে কম করে তিনটে ক্লাসে পড়ানোর জন্য শিক্ষকের ‘দেখা’ মিলত না। পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে ভর দুপুরে বাড়ি ফিরত ছেলেমেয়েরা। এমন ভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিল ঝাড়খণ্ড লাগোয়া সমশেরগঞ্জের বহরাগাছি হাইস্কুল।

অভিভাবকেরাও স্কুলের কাছে বিস্তর অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। সমস্যার সমাধানে স্কুলে বসে বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্র। আর তাতেই ভোল পাল্টায় স্কুলের। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিজ্ঞতায় এই ব্যবস্থা ১০০ শতাংশ সফল। নির্দিষ্ট সময়ে আসা, যাওয়া ছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৩-৪টি করে ক্লাস না হওয়ায় ঘটনাও ‘শূন্য’তে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া গিয়েছে। স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ৩৩০০। শিক্ষক থাকার কথা ৪৯ জন। আছেন মাত্র ৩০ জন। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়নের কোনও শিক্ষকই নেই। একে শিক্ষক ঘাটতি তার উপর কয়েক জন শিক্ষকের উপস্থিতি অনিয়মিত হওয়ায় পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছিল। গড়ে তিনটি করে ক্লাস ‘অফ যাওয়া’ প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অভিভাবকেরা অভিযোগে জানাচ্ছিলেন। সমস্যার সমাধানে সাড়ে তিন বছর আগে স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হয়। ওই ব্যবস্থা চালু করতে খরচ হয় সাকুল্যে বারো হাজার টাকা।

প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই মাসুদ রহমান বলছেন, “হাজিরা বাড়ায় ক্লাস না হওয়ার ঘটনা শূন্যে গিয়ে ঠেকেছে।”

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র মোরফুল শেখ। এখন তাঁর ভাইপো, ভাইঝিরা পড়াশুনো করে। তিনি বলেন, “শিক্ষকদের হাজিরা নিয়ে আর কোনও অভিযোগ নেই গ্রামবাসীদের। ক্লাসে শিক্ষক নেই বলে বাড়ি চলে আসাটাও বন্ধ হয়েছে গ্রামের ছেলেমেয়েদের।”

স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু সিংহ বলছেন, “পিছিয়ে পড়া এলাকার স্কুলের পড়াশুনোর পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে।”

মাস ছয়েক আগে একই পথে হেঁটেছিল সুতির বাঙাবাড়ি হাইস্কুল। সেখানেও মিলেছে সাফল্য। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভজন সরকার বলেন, “মাত্র ২২ হাজার টাকা খরচ করে এই যন্ত্র বসানো হয়েছে। মাসে মাসে শিক্ষকদের ওয়ার্কিং রিপোর্ট যাচ্ছে এখান থেকেই। ফলে আমাদের কাজও খানিক কমেছে।”জেলার প্রাক্তন সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ পাল বলেন, “যা অভিজ্ঞতা তাতে শুধু হাইস্কুলে নয়, পঠনপাঠনে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রাথমিক স্কুলেও বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু হওয়া উচিত।” এবিটিএ’র জেলা সম্পাদক দুলাল দত্তের কথা, “নির্দেশিকা জারি করে বায়োমেট্রিক হাজিরা প্রতি স্কুলে চালু হলে ক্ষতি কী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Attendance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE