মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় প্রাক্তন বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা অনুদান জমা পড়েছে। জমা পড়েছে রাশি রাশি সোনাও। বিশেষ যন্ত্র এনে দু’দিন ধরে চলছে টাকা গোনার কাজ। গণনা এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। শেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নগদ টাকার অঙ্ক এর মধ্যেই তিন কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। অনেকে সোনার অলঙ্কারও দান করেছেন। সেগুলির বাজারমূল্য কম করে হলেও লাখ টাকার কাছাকাছি। ফলে সব মিলিয়ে অনুদানের অঙ্ক পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে আশা করছে মসজিদের অছি পরিষদ।
গত ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেন হুমায়ুন। এর পরেই ভরতপুরের বিধায়ককে বহিষ্কার করে তৃণমূল। সেই সভাস্থলে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ৪০ হাজার মানুষকে বিরিয়ানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সভাস্থলে ১১টি বড় অনুদানের বাক্স রেখেছিলেন হুমায়ুন। সেই থেকে অনুদান এসেই চলেছে। হুমায়ুনের দাবি, সকলে মুক্তহস্তে দান করছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, টাকা গোনার জন্য বিশেষ যন্ত্র আনতে হয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত গোনা টাকার অঙ্ক তিন কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। দানবাক্সে ৫০০ টাকার নোট থেকে শুরু করে খুচরো পর্যন্ত সবই পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখনও সব টাকা গোনা শেষ হয়নি। কয়েকটি দানবাক্সের গণনা এখনও বাকি। মঙ্গলবারও সেই কাজ চলছে।
আরও পড়ুন:
গোনাগুনির সব কাজ চলছে হুমায়ুনের বাড়িতেই। এ জন্য ৩০ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছে। নগদ টাকার পাশাপাশি অনেকে নিজের সোনার গয়নাও দান করেছেন। সেগুলি পরিমাপের কাজ এখনও বাকি। এ ছাড়া, দূরদূরান্ত থেকে অনলাইনেও টাকা আসছে। কিউআর কোড স্ক্যান করেও অনুদান দিচ্ছেন ভক্তেরা। হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুদানের টাকা ও গয়না সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে সিসিটিভি-সহ সব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে।
টাকা-গহনার পাশাপাশি অনেকে মসজিদ নির্মাণের জন্য ইট, বালি, পাথরও দান করছেন। আচমকা এই অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বেলডাঙা-রেজিনগরের ইটভাটাগুলিতে চাপ পড়েছে। ইটের জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকেরা। এলাকার ইটভাটার মালিকদের কথায়, ৬ ডিসেম্বর প্রায় দেড় লাখ টাকার ইট বিক্রি হয়েছে। রবি ও সোমবার বিক্রি হয়েছে আরও কয়েক লক্ষ টাকার ইট। এই বিপুল পরিমাণ ইট মূলত অনুদানের জন্যই কেনা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।