Advertisement
০৭ মে ২০২৪
BJP

BJP: বিজেপি সভাপতি পদ শূন্য, আহ্বায়ক পদে পার্থ

গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে পার্থসারথীর নাম ঘোষণার পরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল দলের অন্দরেই। জেলা দফতরে টানা বিক্ষোভও হয়।

পূর্বতন সভাপতির ইস্তফার পরে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় ওই পদ শূন্যই ছিল।

পূর্বতন সভাপতির ইস্তফার পরে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় ওই পদ শূন্যই ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১৯
Share: Save:

পূর্বতন সভাপতির ইস্তফার পরে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় ওই পদ শূন্যই ছিল। এ বার সেখানে আহ্বায়ক পদে আনা হল রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়কে। সভাপতি না হলেও পুরভোটের আগে কার্যত তাঁর হাতেই দলের রাশ থাকছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে পার্থসারথীর নাম ঘোষণার পরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল দলের অন্দরেই। জেলা দফতরে টানা বিক্ষোভও হয়। ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তৎকালীন জেলা সভাপতি থেকে একাধিক পদাধিকারী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তৃণমূলের শঙ্কর সিংহকে হারিয়ে জয়ী হন তিনিই। ঘটনাচক্রে সেই জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর পুনরায় ইস্তফার পরে তাঁকে আহ্বায়ক পদে আনল বিজেপি।

গত মাসেই ইস্তফা দিয়েছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী। তার পরে আর তাঁকে পদে ফেরানো বা নতুন কাউকে সেই পদে বসানো হয়নি। সামনেই পুরভোট। নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলাতেই রয়েছে ছয়টি পুরসভা।

এর মধ্যে কুপার্স ছাড়া পাঁচটিরই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। বিধানসভা ভোটে এখানকার ছয়টি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। পরে উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে শান্তিপুর। বিধানসভা ভোটে ছয়টির মধ্যে শান্তিপুর, তাহেরপুর, কুপার্সে লিড পেয়েছে তৃণমূল।

পুরভোটের আগে যখন সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে সকলেই, তখন সভাপতির সরে দাঁড়ানো বড় ধাক্কা ছিল গেরুয়া শিবিরে। তবে এর আগেও বার কয়েক ইস্তফা দিয়েছেন অশোক। সেই সময়ে রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে ফের কাজে ফেরেন তিনি। তবে দলের একাংশের দাবি, বারবার ইস্তফা দেওয়ার ‘ব্ল্যাকমেল পলিটিক্স’-এ বিরক্ত ছিলেন দলের নেতৃত্ব। এ বার তাঁকে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনাও ক্রমশ কমছিল। দলের অন্দরে অশোকের বিরোধী বলে পরিচিত পার্থসারথীর হাতে আহ্বায়কের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পরে অশোকের পদে না ফেরার সম্ভাবনায় সিলমোহর পড়ল বলেই মনে করছেন অনেকে।

কংগ্রেস এবং তৃণমূল মিলিয়ে রানাঘাটে তিরিশ বছরের কাউন্সিলর এবং ২৫ বছরের পুরপ্রধান পার্থসারথী ২০১১ সালেও তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন। পরের ভোটে অবশ্য হেরে যান তিনি।

এই বছরের গোড়ায় তাঁকে দলের জেলা সহ-সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। পরে তিনি নিজেই পুর প্রশাসক পদে ইস্তফা দেন। চার্টার্ড ফ্লাইটে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যদের সঙ্গে দিল্লি গিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এর পরে প্রার্থী হয়ে জিতে আসেন। তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার-সহ দলের একাংশের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হলেও টিকিট দেওয়া নিয়ে অশোকের ক্ষোভ ছিল।

নদিয়ার দক্ষিণে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে ভাল ফল করলেও নিচুতলায় সাংগঠনিক দুর্বলতা অস্বস্তিতে রেখেছে বিজেপিকে। সেখানে পার্থের মতো ঠান্ডা মাথার, অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত মুখকেই সামনে রাখল বিজেপি। তাঁর নিজের বিধানসভা এলাকার মধ্যেই রয়েছে তিনটি পুরসভা।

পাশাপাশি দক্ষিণে বিভিন্ন এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণ সম্পর্কেও জানেন ভাল মতোই। দলের একাংশের কথায়, তৃণমূলের অন্দরের দুর্বলতা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল তিনি। সেই সবই এ বার পুরভোটে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।

আহ্বায়ক পদে নিযুক্ত হওয়ার পর পুরভোটকেই যে পাখির চোখ করছেন পার্থ, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এ দিন। তিনি বলেন, “পুরভোটের আগে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করাটাই এখন প্রথম কাজ।”

তবে তৃণমূল থেকে আসা পার্থকে সকলের সহায়তা নিয়ে কতটা কাজ চালাতে পারেন, সেটাো বোধহয় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Parthasarathi Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE