Advertisement
E-Paper

সাপ মোটেই শত্রু নয়, বুঝিয়ে চলেছেন ওঁরা

শুধু তো সাপ নিয়ে ভুল ধারণা নয়। সাপে কাটলে কী করতে‌ হবে তা নিয়েও স্পষ্ট ধারণা নেই অনেকেরই। হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে উঠোনে ফেলে তুকতাক-ঝাড়ফুঁক তো লেগেই আছে। অন্তত বছর কয়েক আগেও সে দৃশ্যের সাক্ষী থাকতেন করিমপুরের নানা গাঁয়ের মানুষ।

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
ভয় পাবেন না। নিজস্ব চিত্র

ভয় পাবেন না। নিজস্ব চিত্র

মাঠে-ঘাটে ওঁরা সাপ ধরে বেড়ান। লোককে শিখিয়ে বেড়ান, সাপে কাটলে কী করতে হবে।

সব সাপের বিষ নেই। আবার বিষধর হলেও অনেক সাপ সহজে ছোবল দেয় না। কিন্তু সাধারণের মনে সাপ নিয়ে ভীতি বরাবরের। সে নির্বিষ হোক বা বিষধর, দেখলেই পিটিয়ে মারা গাঁ-গঞ্জে আকছার।

শুধু তো সাপ নিয়ে ভুল ধারণা নয়। সাপে কাটলে কী করতে‌ হবে তা নিয়েও স্পষ্ট ধারণা নেই অনেকেরই। হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে উঠোনে ফেলে তুকতাক-ঝাড়ফুঁক তো লেগেই আছে। অন্তত বছর কয়েক আগেও সে দৃশ্যের সাক্ষী থাকতেন করিমপুরের নানা গাঁয়ের মানুষ।

সেই ছবিটাই বদলে দেওয়ার কাজে নেমেছেন করিমপুরের কয়েক জন যুবক। বছর পাঁচেক হল, তাঁরা এলাকার মানুষজনকে সাপ সম্পর্কে সচেতন করছেন। সাপে কাটলে ওঝা নয়, চিকিৎসার জন্য যে হাসপাতালই সেরা ঠিকানা তা বোঝাচ্ছেন তাঁরা। এলাকার স্কুল আর ক্লাবগুলোতেও শিবিরের আয়োজন করছেন। সেই সঙ্গেই করিমপুরে বা তার আশপাশের এলাকায় সাপের দেখা মিলেছে খবর পেলে ছুটে যাচ্ছেন। সাপ ধরে এনে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেন তাঁরা।

এই লাগাতার প্রচারে যে সাড়াও মিলছে, তা বলছে হিসেবের খাতা। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের খাতা বলছে, ২০১৪ সালে ৬৭ জন এবং পরের বছর ৯১ জন সাপে কাটা রোগীকে ‘অ্যান্টি-ভেনাম সিরাম’ (এভিএস) দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়েছিল। গত বছরেই সংখ্যাটা লাফিয়ে পৌঁছে গিয়েছে ৩৭২-এ। আর এ বছর এখনও পর্যন্ত ১৬১ জন হাসপাতালে গিয়েছেন।

স্থানীয় যুবকদের ওই দলে রয়েছেন ব্যবসায়ী গোলক বিশ্বাস, শিক্ষক তরুণ পোদ্দার ও নয়ন স্বর্ণকার। গোলক জানান, বর্ষা পড়লে ডাঙার খোঁজে সাপ লোকালয়ে এসে আশ্রয় নেয়। তাই এ সময় সর্পদষ্ট হওয়ার সংখ্যা বাড়ে। আগে কাউকে সাপে কাটলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে যেতেন। মানুষটি ক্রমশ নেতিয়ে পড়লেও ঝাড়ফুঁক-তুকতাক চলতে থাকত। এখন কিন্তু অনেকেই সচেতন হয়েছেন।

করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডলও মানছেন, গত তিন-চার বছরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে অনেকে আসছেন। প্রতি দিন গড়ে চার জন ভর্তি হন। তিনি বলেন, ‘‘এভিএস ওষুধ হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে। রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে এলেই বাঁচানো সম্ভব।’’ আর তরুণ বলছেন, “সাপ মোটেই মানুষের শত্রু নয়। বেশির ভাগ সাপই নির্বিষ। তবু অনেক সাপ বেঘোরে মারা পড়ে। আমরা তা নিয়েও সকলকে সচেতন করছি।’’

Awareness Campaign Snakes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy