গাঁ-গঞ্জ, খেত-খামারের আবাদ কিংবা মফস্সল শহরটার কানাগলি, পিচ ওঠা রাস্তা— হাতের তেলোর মতো চিনতেন যে মানুষটা। শনিবার তাঁর স্মরণ সভায় সেই গ্রাম-শহরই বুঝি তাঁর খোঁজে ভেঙে পড়ল বহরমপুরের ওয়াইএমএ স্টেডিয়ামে।
তাঁর ঢাউস পোট্রেটে অগুন্তি মালার স্তূপ। তাঁকে নিয়ে দু’কথা বলতে উঠে সকলের চোখে পদ্মা পাড়ের পানি।
মানুষের সেই আবেগই বোধহয় নিশ্চুপে কাজে লাগাতে চেয়েছিল তাঁর দল। উপস্থিত দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের তাই মান্নান স্মরণে বার বার ফিরে এলে পঞ্চায়েতনির্বাচন। বিরোধীরা এমনই মনে করছেন।
বছর কয়েক আগে, তৃণমূলে পা বাড়ানোর পরে কংগ্রেসের পুরনো গড়ে ধীরে ধীরে নেমেছিল ধস। স্মরণ সভায় তাই সে কথা মনে পড়িয়ে জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘‘ভোটের মাধ্যমে এ জেলায় মাত্র ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত, একটি পঞ্চায়েত সমিতি, জেলাপরিষদের একটি সদস্য পদ ও একটি পুরসভা আমরা দখল করতে পেরেছিলাম। আর মান্নানদা আসার পরে জেলার ২০০টিরও বেশি পঞ্চায়েত ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন, জেলাপরিষদের ৪৩টি আসন আর জেলার ৮টি পুরসভার প্রায় সব ক’টিই আমনাদের দখলে। আগামী বছর পঞ্চায়েত ও বহরমপুর পুরসভার ভোটে সব আসন জিতে আমাদের বিরোধী শূন্য করতে হবে।’’
যা শুনে, জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘‘স্মরণ সভাতেও সেই রাজনীতির ছায়াটুকু এড়িয়ে গেলেই পারতেন তৃণূল নেতারা।’’
তবে, এ দিন মান্নান হোসেনের স্মরণসভায় শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া তেমন ভারী নাম ছিল না। মান্নান ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘সৌজন্য দেখিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে আরও কয়ংক জন অন্তত আসতে পারতেন।’’
শুভেন্দু অবশ্য তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘এই স্মরণসভায় পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের থাকার কথা ছিল। কিন্তু আজ নবী দিবস। হজরত মহম্মদের জন্মদিন। তাঁর এলাকায় নবীদিবস পালন অনুষ্ঠানের জন্য ফিরহাদ হাকিম আসতে পারেননি।’’