দু’দিন আগেই দিদির বিয়ে হয়েছে। আনন্দের রেশটা এখন রয়েছে। সোমবার তাই তুতো ভাই ও এক বন্ধুকে নিয়ে স্কুটিতে চেপে বেড়িয়েছিল সোমনাথ রায়। মাঝে তাহেরপুরের কাছে একটি ছোট গাড়ির ধাক্কায় বছর সতেরোর সোমনাথ, তাঁর বন্ধু অভ্র দাস (১৭) ও সুদীপ সর্দার (১৬) ঘটনাস্থলেই মারা যায়। সোমনাথ ও সুদীপ পূর্ব বাদকুল্লা বরিশালপাড়ার বাসিন্দা। অভ্রর বাড়ি নবদ্বীপে। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন ছোট গাড়ির চার যাত্রী ও চালক। যাত্রীরা কৃষ্ণনগরের মাদার হাউসের সিস্টার। আহতেরা শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার বাদকুল্লার বাসিন্দা সোমনাথের দিদির বিয়ে ছিল। অভ্র ও সুদীপ একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। সে বিয়ে উপলক্ষ্যে সুদীপের বাড়িতে এসেছিল। বাদকুল্লারই বাসিন্দা সুদীপ নবম শ্রেণিতে উঠে স্কুল ছেড়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় সোমনাথ তার দিদির স্কুটিতে চেপে বাদকুল্লা থেকে রানাঘাটের দিকে যাচ্ছিল। মাঝে বাদকুল্লার ভাদুড়িতে সঙ্ঘশ্রী ক্লাবের কাছে স্কুটিটি আচমকা গাড়ির সামনে চলে আসে। পুলিশের দাবি, স্কুটি চালক ওই কিশোরদের মাথায় হেলমেট ছিল না। তার উপর গতিও ছিল অস্বাভাবিক। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমচকা গাড়ির সামনে চলে আসে স্কুটিটি। ছোট গাড়িটি কিশোরের বাঁচাতে গিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছে ধাক্কা মারে। এতেই এই বিপত্তি। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই কিশোরেরা। সোমনাথের প্রতিবেশি তরুণ দাস বলেন, “শুক্রবারই সোমনাথের দিদির বিয়ে হয়েছে। রবিবার বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। আর অভ্র বিয়ের জন্য সোমনাথদের বাড়ি এসেছিল। এ ভাবে তরতাজা তিন কিশোরের মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।”
ছোট গাড়ির যাত্রীরাও আহত হন। চাপড়া মেরি ইমাকুলেট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সিস্টার কবিতা বলেন, ‘‘এ দিন কৃষ্ণনগরে বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছিল। তা সেরে সিস্টারেরা কলকাতায় ফিরছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় সিস্টার লিনেটের অবস্থা যথেষ্ট খারাপ।’’