হোক না সরকারি, খালিই তো পড়ে রয়েছে! শাসক দলের দলীয় কার্যালয় গড়তে এর চেয়ে সহজ যুক্তি কিছু হয়?
তোয়াক্কা না করেই তাই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম ব্লকে পারুলিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমিতেই দিব্যি পাকা দালানকোঠা তৈরি করে দলীয় কার্য়ালয় তৈরি করেছে তৃণমূল। পাশেই পুলিশ ক্যাম্প, তাদেরও সে ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে কোনও হেলদোল চোখে পড়েনি। মগের মুলুক নাকি? প্রশ্নটা শুনে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন, কান্দির মহকুমাশাসক জানাচ্ছেন, আপাতত তো দলীয় কার্য়ালয় তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে কি সব দোষ মাফ? তার অবশ্য কোনও সদুত্তোর দিতে পারেননি মহকুমাশাসক অভীক কুমার দাস।জেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির অবস্থা সাধারন ভাবে তহতব্য নয়। পারুলিয়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিও তার ব্যতিক্রম ছিল না। পনেরো শয্যার ওই হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী— ঘাটতি ছিল সব ক্ষেত্রেই। এলাকার বাসিন্দাদের তাই প্রাথমিত চিকিৎসার জন্যও ছুটতে হয় মহকুমা হাসপাতালে।
হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে নার্স— কোয়ার্টারের ভগ্ন দশা। আশপাশের মানুষজন জানাচ্ছেন, সন্ধে হলেও সেখানে অসামাজিক কাজকর্মের ঠেক বসে নিত্য। হাসপাতালের সামনে দখল করে পান-বিড়ির দোকান চলছিল দীর্ঘদিন। আর ভাঙা কোয়ার্টার দখল করে আসবাবের চালু দোকানও বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল। এ বার দলীয় কার্য়ালয়।
পারুলিয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি রফিক শেখ বলেন, “রাস্তার ধারে অনেক ছোট ছোট দোকান হয়েছে তখন তো কিছু বলছেন না! আর আমরা যেখানে দলীয় কার্যালয় তৈরি করছি সেটা হাসপাতালের জমি কে বলল!’’ তা হলে কার জমি? রফিক বলছেন, ‘‘ওটা পূর্ত দফতরের।’’ তা হলে সরকারি জমিতে শাসক দলের কার্য়ালয় বৈধ? ২৫ ফুট বাই ২৫ ফুটের পাকা ঘর তৈরি প্রায় শেষ। ঢালাইটুকুই বাকি। তবে, জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘দেখুন তৃণমূল ক্ষমতায়, কে বাধা দেবেন বলুন তো!’’ খড়গ্রাম দক্ষিণ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সমরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “এটা কনও হয় নাকি, সরকারি জমি সেখানে দলীয় কার্যালয় হতেই পারে না। খবর পেয়েই কাজ বন্ধ করতে বলেছি।’’