Advertisement
০২ মে ২০২৪

ব্লক অফিসে কর্মিসভা, লাটে উঠল কাজকর্ম

কর্মীদের কেউ অর্ধেক ছুটি, কেউ পুরো ছুটি নিয়ে গিয়েছিলেন সভা করতে। ফলে, ব্লক কার্যালয় কার্যত খালি ছিল। কাজ না হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরতে হল অনেককে। 

ফাঁকা কার্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা কার্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৮
Share: Save:

পরপর তিন দিন ছুটি। তাই মঙ্গলবার অফিস খুলতে ভিড় উপচে পড়েছিল নাকাশিপাড়া ব্লকে। কিন্তু কর্মীদের কেউ অর্ধেক ছুটি, কেউ পুরো ছুটি নিয়ে গিয়েছিলেন সভা করতে। ফলে, ব্লক কার্যালয় কার্যত খালি ছিল। কাজ না হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরতে হল অনেককে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার-রবিবার সরকারি ছুটি তো আছেই। সোমবার শিবরাত্রির জন্য ছুটি ছিল। ফলে, মঙ্গলবার ব্লক কার্যালয় খুলতে ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু এ দিনই নাকাশিপাড়ার ব্লক দফতরের ‘আনন্দধারা’ হলে তৃণমূলের এক কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সভায় যোগ দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সমষ্টি উন্নয়ন, পঞ্চায়েত, ভূমি দফতর, কৃষি দফতর, স্বাস্থ্য দফতরের কর্মচারীরা। অভিযোগ, সভা সাড়ে ১২ টায় শুরু হওয়ার কথা হলেও সকাল থেকেই কর্মীদের অনেকে তা-ই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ব্লক অফিসের বেশির ভাগ চেয়ার ছিল ফাঁকা। ফলে, সারাদিন অপেক্ষাই সার হয়েছে সমস্যা নিয়ে ব্লক দফতরে আগত একাংশের।

নাকাশিপাড়া ধর্মদা থেকে এসেছিলেন রাজু পাল। দিনের শেষে খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘সকালে কাজ সেরে দুপুরে এসেছিলাম। কিন্তু ঘরে ঢুকে দেখি চেয়ার সব ফাঁকা। এক জনকে জিজ্ঞাসা করতে বললেন কর্মীরা মিটিংয়ে ব্যস্ত।’’ আর এক ভুক্তভোগী ফজরুল শেখ বলেন, ‘‘মাঠের কাজ ফেলে এসেছিলাম। এখন তো দেখছি আসাটাই বেকার হয়ে গেল।’’

প্রশ্ন উঠছে, তিন দিন ছুটির পর ব্লক অফিস খুললে ভিড় হবে তা জেনেও কেন ব্যস্ত সময়ে কর্মিসভা করা হল?

তৃণমূলের নাকাশিপাড়ার কর্মী সংগঠনের আহ্বায়ক শঙ্করপ্রসাদ সরকার বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই ভোট ঘোষণা হয়ে যাচ্ছে। তার পরে কর্মিসভা করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই অফিস-সময়ে সভা করতে হল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যে সব কর্মচারীরা এই সভায় যোগ দিয়েছেন তাঁরা কেউ হাফ ক্যাজুয়াল লিভ কেউ ফুল ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে এসেছেন।’’

বিরোধী সংগঠনের কথায়, অফিস চলাকালীন সভা হল। সরকারের সংগঠন বলেই কি সব মাফ? কর্মসংস্কৃতিকে লাটে তোলা হচ্ছে।

নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘কর্মিসভা হয়েছে ঠিকই, তাতে সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা হয়নি। সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।’’ তৃণমূলের জেলা সম্পাদক গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘এটা দলীয় ব্যাপার নয়। যদি এই ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ হয়ে থাকে তা হলে সরকার অবশ্যই তা দেখবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BDO Office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE