রুদ্ধ: টোটোর লম্বা লাইনে থমকে গিয়েছে গতি। নবদ্বীপে। —নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহখানেক আগের কথা। নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে নেমে টোটোয় উঠেছিলেন নবদ্বীপ বউবাজারের বাসিন্দা হিমঙ্কর ভট্টাচার্য। টোটোয় আরও দু’জন যাত্রী ওঠেন। যাত্রা শুরুর আগেই চালক মাথাপিছু ১৫ টাকা ভাড়া দাবি করেন। কিন্তু নবদ্বীপে পুরসভা নির্ধারিত টোটোর ভাড়া তো মাথাপিছু দশ টাকা। তাহলে পনেরো টাকা কেন? প্রশ্ন করতেই অকথ্য অপমান করে সবাইকে টোটো থেকে নামিয়ে দেন নামিয়ে দেয় ওই চালক। বিষয়টি নিয়ে হিমঙ্করবাবু পুরপ্রধানকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
দিন পনেরো আগে শিলচর থেকে তমালতলার বাসিন্দা আশিস ভট্টাচার্যের বাড়িতে এসেছিলেন আত্মীয়েরা। ফেরার দিন পোড়ামা তলা থেকে মাথাপিছু পনেরো টাকা ভাড়ায় নবদ্বীপ স্টেশনে যাওয়ার জন্য টোটো ঠিক করে দেন গৃহকর্তা। কিন্তু শিলচর ফিরে সেই আত্মীয়েরা জানান, স্টেশনে নামার পর জোর করে তাঁদের কাছ থেকে মাথাপিছু পঞ্চাশ টাকা আদায় করেছেন সেই টোটোচালক।
গরমের দুপুরে তিন শিশু নিয়ে এক পর্যটক দম্পতি বিষ্ণুপ্রিয়া হল্টে নেমে খেয়াঘাটে যাবেন বলে টোটোয় উঠেছিলেন। খেয়াঘাট থেকে বেশ কিছু দূরে তাঁতকাপড় হাটের সামনে
তাঁদের নামিয়ে দিয়ে টোটো চালক জানিয়ে দেন—‘এটাই খেয়াঘাট। বাকিটা হেঁটে যান’।
এমন টোটো-কাহিনির শেষ নেই নবদ্বীপে। শুরুতে যাকে সঙ্কটমোচন বলে ভরসা করেছিল শহরের মানুষ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই হয়ে উঠছে ঘাতক। যত দিন যাচ্ছে টোটোকে ঘিরে সমস্যা বাড়ছে নবদ্বীপে। অথচ মাত্র বছর দুয়েক আগে শহরের প্রবল প্রতাপশালী রিকশার পরিবর্ত হিসেবেই মানুষ টোটোকে কাছে টেনে নিয়েছিল। প্রবল জনসমর্থন পেয়ে শহরে প্রায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে টোটোর সংখ্যা। নিয়ন্ত্রনহীন সংখ্যাবৃদ্ধির নিটফল, নবদ্বীপের সংকীর্ণ রাস্তা সকাল থেকে রাত দমবন্ধ যানজটে হাঁসফাঁস করছে। পোড়ামাতলা, বাজার রোড, ঢপওয়ালীর মোড়, হরিসভা পাড়া, বউবাজার, বুড়োশিবতলার মতো জনবহুল রাস্তা থেকে শুরু করে গলিঘুঁজি, সর্বত্রগামী টোটোর কারণে এখন ধুঁকছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে টোটো চালকের একাংশের অভব্য আচরণ। ঠিক এমন কারণেই রিকশাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে নবদ্বীপ। খেয়ালখুশি মতো ভাড়া নেওয়া, যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার মতো একাধিক অভিযোগ টোটোচালদের বিরুদ্ধে। সাধারণ পথচারী শহরের রাস্তাকে ভয় পাচ্ছেন। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলছেন, ‘‘নবদ্বীপ পুরএলাকায় টোটোর ভাড়া দশ টাকা। এর বেশি নেওয়া যাবে না। নিয়ম ভাঙলে পুরসভা বাধ্য হবে চালকের লাইসেন্স বাতিল করতে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy