E-Paper

বিধি শিকেয়, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভোটে প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহার

মঙ্গলবার রাত দশটার পর থেকেই ভোটযন্ত্র-সহ গণনা কেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী গোছানোর কাজ শুরু হয়।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪ ০৯:৫১
রানাঘাট কলেজ ভোট গণনা কেন্দ্রে ছড়িয়ে প্লাস্টিক (উপরে)। নীচে, গণনা কেন্দ্রের বাইরেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্লাস্টিক।

রানাঘাট কলেজ ভোট গণনা কেন্দ্রে ছড়িয়ে প্লাস্টিক (উপরে)। নীচে, গণনা কেন্দ্রের বাইরেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্লাস্টিক। ছবি: সুদেব দাস।

দুই-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটেছে নির্বাচন। মঙ্গলবার ফলপ্রকাশ হয়েছে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন প্লাস্টিক মুক্ত হল কোথায়— গণনার শেষে এই প্রশ্নই তুলছে পরিবেশ কর্মীদের একাংশ। কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী নির্বাচনের কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তা সত্ত্বেও গণনা শেষে ভোটযন্ত্র প্লাস্টিকে মুড়ে বাক্সবন্দি কর হয়েছে এবং গণনার দিনে কমিশনের দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজেও দেদার ব্যবহৃত হয়েছে প্লাস্টিক। শুধুমাত্র রানাঘাট কলেজ তথা গণনা কেন্দ্রে ভোট গণনার দিন কয়েক টন প্লাস্টিকের ব্যবহার হয়েছে বলেও অভিযোগ এলাকার পরিবেশ কর্মীদের।

মঙ্গলবার রাত দশটার পর থেকেই ভোটযন্ত্র-সহ গণনা কেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী গোছানোর কাজ শুরু হয়। বুধবার কলেজে গিয়ে দেখা গেল, মাঠে থাকা অস্থায়ী শিবির কার্যত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সবুজ মাঠে ছড়িয়ে রয়েছে খাবারের উচ্ছিষ্ট। সঙ্গে প্লাস্টিকের পাত্র ও প্লাস্টিকের ব্যাগ। দুর্গন্ধে অনেকেই নাকে-মুখে রুমাল চাপা দিয়ে কলেজ চত্বরে যাতায়াত করছেন। ভোট কর্মীদের অনেকেই বলছেন, কমিশনের নির্দেশিকা অমান্য করে থার্মোকলের থালা ও প্লাস্টিকের গ্লাস ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। কলেজের এক শিক্ষক জানান, ভোট গণনা শেষে কলেজে এই ধরনের দূষণের অভিজ্ঞতা প্রথম নয়। বছরের পর বছর একই ঘটনা চলে আসছে। তাঁর দাবি, কমিশন তথা প্রশাসনের এই বিষয়ে আরও অনেক বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল।

বুধবার দুপুরে কলেজের মাঠে থাকা অস্থায়ী শিবির খুলে ফেলার কাজ করছিলেন কয়েক জন কর্মী। তাঁদের প্রত্যেকের মুখ কাপড় বা গামছা দিয়ে বাঁধা। প্রশ্ন করতেই তাঁরা বলেন, ‘‘কী আর করব, বলুন। উচ্ছিষ্ট খাবারের পচা গন্ধে এলাকায় টেকা যাচ্ছে না।’’

সূত্রের খবর, ভোট গণনায় অংশ নেওয়া কর্মীদের জন্য সকালে জলখাবার, দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা করেছিল কমিশন। মধ্যাহ্নভোজ আবার প্লাস্টিকের পাত্রে করে প্লাস্টিক ব্যাগে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য কমিশনের তরফে আগেই দরপত্র ডেকে বেশ কয়েকটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, ওই বরাত দেওয়ার চুক্তিপত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার যে করা যাবে না, সে বিষয়ে কেন আগাম পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন।

বিষয়টি নিয়ে রানাঘাটের মহকুমা শাসক রৌনক আগরওয়াল বলেন, ‘‘কমিশনের গাইড লাইনে বলা হয়েছে, প্লাস্টিকের ব্যবহার যতটা কম করা যায়। ভোটযন্ত্র বাক্সবন্দি করার ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের কোনও ব্যবহার হয়নি। তবে খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার যথেচ্ছই হয়েছে। মঙ্গলবার গণনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই গণনা কেন্দ্র ও কলেজের মাঠ প্লাস্টিকমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy