Advertisement
০৫ মে ২০২৪
TMC

পুরনো শত্রুতার জেরেই খুন তৃণমূল নেতা? খুনিকে খুঁজতে রাতভর ‘জুব্বার বাহিনী’র তাণ্ডব গ্রামে!

নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় বুধবার রাতে ইদের বাজার সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতী হামলার শিকার হন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী জাহিদুল শেখ।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:২৮
Share: Save:

বেধড়ক মারে চিড় ধরেছে শিরদাঁড়ায় এক জনের। ধারালো অস্ত্রের কোপে পায়ের ক্ষত নিয়ে ছটফট করছেন আর অন্য জন। হাসপাতালের বেডে শুয়েও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট তাঁদের চোখেমুখে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর খুনিকে খুঁজে বার করতে এলাকায় তাণ্ডব চালান ‘জুব্বার’ বাহিনীর লোক জন। মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর বয়ান অনুযায়ী চেহারা মিলিয়ে খোঁজ শুরু হয় আততায়ীর। বেধড়ক মারধর করা হয় কয়েক জনকে। স্থানীয়দের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর থেকে এলাকার অনেক বাড়িই এখন পুরুষশূন্য। সন্ধ্যা থেকে রাতভর তাণ্ডবে ভীত-সন্ত্রস্ত্র মহিলারা। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব আটকাতে কঠোর প্রশাসনও। এলাকায় বেড়েছে পুলিশি টহলদারি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় বুধবার রাতে ইদের বাজার সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতী হামলার শিকার হন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী জাহিদুল শেখ। গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির পর পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার। অভিযোগ ওঠে কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, জাহিদুল স্থানীয় তৃণমূল নেতা জুব্বার শেখের ‘ডান হাত’ ছিলেন। শাগরেদের মৃত্যুতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সেই জুব্বার বাহিনী। তাদের আক্রমণে তিন জন হাসপাতালে ভর্তি বলে অভিযোগ।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা আমির হামজা শেখ বলেন, ‘‘চণ্ডীপুর গ্রামের একটি মাচানে আমরা বসে ছিলাম। হঠাৎ দু’টি বাইকে করে চার জন লোক এসে দাঁড়াল। আমাকে বলল ‘তুই জুব্বাই শেখ?’ আমি উত্তর দেওয়ার আগেই লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র বার করে বেধরক মারধর শুরু করল। ওরা প্রত্যেকে জুব্বারের লোক বলে জানিয়েছিল।’’ জখম হওয়া আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বাড়ির উঠোনে বসে ছিলাম। হঠাৎ এসে বলল, তুই জাহিদুল কে খুন করেছিস? উত্তর দিলাম, বাড়িতেই ছিলাম না তিন দিন। কে শোনে কার কথা! লোহার রড দিয়ে বেধরক মারধর শুরু করল। এক জন কী একটা দিয়ে কোপ মারল, পা কেটে গলগল করে রক্ত বেরোতে শুরু করল। গলা টিপেও ধরেছিল।’’

প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বরে হরনগর পঞ্চায়েতের ঘুনি এলাকায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল এলাকা। সংঘর্ষে কলিম শেখ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এ ছাড়াও দু’পক্ষের মোট ছ’জন জখম হয়েছিলেন। উভয় গোষ্ঠীর তরফে নাকাশিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। কালিমকে গুলি চালানোর ঘটনায় নাম উঠে এসেছিল জুব্বারের অন্যতম সঙ্গী জাহিদুলের। এ বার জাহিদুল খুনের নেপথ্যে সেই কালিমের হাত রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE