Advertisement
E-Paper

জল আসতে উচ্ছ্বাসে ভেসে গেল ধুলিয়ান

পাড়ার মোড়ে মোড়ে সকাল থেকেই জটলা।কেউ বলেছেন, ‘‘ওরে, আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকব। জলেরই তো দেখা নেই।’’কেউ ভরসা দিয়েছেন, ‘‘আর একটু থাম না বাপু। সবুরে জল মিলবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৬
জলঘর: জল যাবে এখান থেকেই। ধুলিয়ানে। নিজস্ব চিত্র

জলঘর: জল যাবে এখান থেকেই। ধুলিয়ানে। নিজস্ব চিত্র

পাড়ার মোড়ে মোড়ে সকাল থেকেই জটলা।

কেউ বলেছেন, ‘‘ওরে, আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকব। জলেরই তো দেখা নেই।’’

কেউ ভরসা দিয়েছেন, ‘‘আর একটু থাম না বাপু। সবুরে জল মিলবে।’’

মিললও তাই। শনিবার দুপুর একটা নাগাদ ট্যাপ থেকে জল পড়তেই উচ্ছ্বাসে ভাসল ধুলিয়ানের মোমিনপাড়া, শিবমন্দির, ঠাকুরপাড়া, লক্ষ্মীনগর। সকালের স্নান ভুলে বাচ্চারা ফের বসে পড়ল ট্যাপের নীচে। কেউ বাড়িতে ছুটল জলের খবর দিতে।

তীব্র গরমে জলের খবর স্বস্তির তো বটেই। কিন্তু ধুলিয়ানের এমন প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মতো। কারণ, একশো বছরের পুরনো এই শহরে এই প্রথম পাইপ লাইনে এল পরিস্রুত জল।

ধুলিয়ানের এত দিন ভরসা ছিল নলকূপ। কিন্তু সেই জলেও ধরা পড়ে আর্সেনিক। ফলে শহ়রে রমরমিয়ে চলছিল পানীয় জলের ব্যবসা। যাঁদের সেই জল কিনে খাওয়ার ক্ষমতা ছিল না তাঁরা বাধ্য হয়েই নির্ভর করতেন নলকূপের উপর।

পুরসভা সূত্রে খবর, এখন প্রায় এক লক্ষ জনবসতির এই শহরে প্রত্যেকে মাথা পিছু ১০০ লিটার করে জল পাবেন। জলের জন্য কর না লাগলেও বাড়িতে জলের সংযোগ নিতে পুরসভাকে খচর বাবদ টাকা দিতে হবে। তৃণমূলের পুরপ্রধান সুবল সাহা বলছেন, ‘‘শহরকে এটা বাংলা নববর্ষের উপহার।’’

শনিবার থেকে পরীক্ষা মূলক ভাবে জল সরবরাহ চালু হয়ে গেলেও আগামী ৮ এপ্রিল এই প্রকল্পের উদ্বোধনও করা হবে। পুরসভার পক্ষ থেকে হ্যান্ডবিল ও মাইকে প্রচারও চলছে পুরোদমে, ‘‘পাইপ লাইন পরিষ্কারের জন্য জলে কেমিক্যাল মেশানো আছে। এখনই এই জল খাবেন না।”

কিন্তু উচ্ছ্বসিত শহর বলছে, ‘‘জল না হয় ক’দিন পরেই খাব। কিন্তু সত্যি সত্যিই যে আমরা এ ভাবে পরিস্রুত পানীয় জল পেতে পারি, সেই ভাবনাটাই ভুলে গিয়েছিলাম।’’ ধুলিয়ান শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গঙ্গা। অথচ জলকষ্টে ভুগেছে গোটা শহর।

২০০৮ সালে ২০.৬২ কোটি টাকার জল প্রকল্পের শিলান্যাস হয় বাম জমানায়। কথা ছিল, দু’বছরের মধ্যে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে যাবে। কিন্তু পুরসভা দখলের কাজিয়ায় থমকে যায় সেই কাজ। ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে ৯ বছর। প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৮৯ কোটি টাকা।

যার আমলে প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল সিপিএমের সেই প্রাক্তন পুরপ্রধান সুন্দর ঘোষও খুশি ধুলিয়ানে জল প্রকল্প চালু হওয়ায়। তাঁর কথায়, ‘‘অবশেষে ধুলিয়ান জলকষ্ট থেকে বাঁচল। সেই সময়েই আমরা ৭৫ শতাংশ কাজ করে ফেলেছিলাম। ক্ষমতা দখলের নোংরা রাজনীতিতে প্রকল্প শেষ করা যায়নি।”

Water Tank Tubewell
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy