Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ক্ষতিপূরণ মিলবে তো, আশঙ্কায় গম চাষিরা

অজানা রোগ যাতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য বিঘের পর বিঘে গমের খেত পুড়িয়ে দিচ্ছে কৃষি দফতরের লোকজন। দফতরের দাবি, এর জন্য চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁদের সেই আপ্তবাক্যে ভরসা রাখতে পারছেন না দুই জেলার গমচাষিরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
করিমপুর ও ডোমকল শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০০:২০
Share: Save:

অজানা রোগ যাতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য বিঘের পর বিঘে গমের খেত পুড়িয়ে দিচ্ছে কৃষি দফতরের লোকজন। দফতরের দাবি, এর জন্য চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁদের সেই আপ্তবাক্যে ভরসা রাখতে পারছেন না দুই জেলার গমচাষিরা।

তাদের কথায়, এ ভাবে গম পুড়িয়ে শেষে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কিনা তা তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। এমনিতেই সরকারি সাহায্য পেতে গেলে জুতোর শুকতলা খুলে যায়। যদিও মুর্শিদাবাদ উপ-কৃষি অধিকর্তা তাপস কুণ্ডুর বক্তব্য, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সরকারি নিয়ম মেনেই ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’

মুর্শিদাবাদের ডোমকল, জলঙ্গি, রানিনগর-১ এবং নওদা ও হরিহরপাড়ায় ওই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কৃষি দফতরের যৌথ উদ্যোগে প্রায় মাস খানেক ধরে গোটা এলাকা ঘুরে দেখে মোট ৫০৯ হেক্টর
জমিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জমির গম কেটে পুড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে।

একই ভাবে নদিয়ার করিমপুরেও গমগাছ পোড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। সেখানেও ক্ষতিপূরণ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন চাষিরা। মুরুটিয়ার গম চাষি বিবেকানন্দ জোয়ারদারের অভিযোগ, গতবারের মতো এ বারেও এলাকার বহু জমির গম শীষে দানা হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষিরা রোগগ্রস্ত গমের গাছ নিয়ে স্থানীয় ব্লক কৃষি আধিকারিকের অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু সারাদিনের অপেক্ষার পরেও আধিকারিকের দেখা মেলেনি। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘শুনেছি নাকি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের নামের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ এ নিয়ে কোনও কথাই বলেনি। তা হলে তালিকা হল কী করে?’’

তালিকা তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেলও। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার গম পোড়ানোর আগে বুধবার সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বিডিও। সেখানে গম পড়ানোর কথা বলা হয়। অনেকে তার বিরোধিতা করেন। তাঁদের দাবি ছিল, যদি গমগাছ পোড়াতেই হয় তবে সঠিক ভাবে চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করে তবেই তা পড়ানো উচিৎ। এমনকী, পঞ্চায়েত এলাকার কোনও চাষির নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে তার কিছুই পঞ্চায়েতকে জানানো হয়নি। মাঠে না গিয়ে ব্লক কৃষি আধিকারিকের ঘরে বসে কয়েক জন দালালকে দিয়ে সেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

তেহট্ট ২ ব্লকের কৃষি আধিকারিক বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তেরা চাষিরা হেক্টর পিছু পঞ্চাশ হাজার তিনশো পঁচাত্তর টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। চাষিদের এই টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Compensation Wheat Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE