Advertisement
E-Paper

কেন দলের নির্দেশ অমান্য করে অনাস্থা প্রস্তাব? ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাউন্সিলরদের শো কজ় করল দল

দীর্ঘ টালবাহানা শেষে কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অপসারণের দাবি গৃহীত হয় সোমবার। পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলের বৈঠকে ১৫ জনের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানকে অপসারণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। রীতার বিরুদ্ধে অনাস্থার দাবি তোলেন তাঁরই দলের কাউন্সিলরেরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩০
কৃষ্ণনগর পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলের ডাকা বৈঠকে কাউন্সিলরেরা।

কৃষ্ণনগর পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলের ডাকা বৈঠকে কাউন্সিলরেরা। — নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সোমবার কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবি গৃহীত হয়েছিল। পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান রীতা দাসের বিরুদ্ধে অনাস্থার দাবি তুলেছিলেন তাঁরই দলের কাউন্সিলরেরা। দলের নির্দেশকে কার্যত ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে ১৫-০ ভোটে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়। এ বার সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মাথায় সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের শো কজ় করল তৃণমূল।

চেয়ারম্যান ও বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর কাউন্সিলরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। এর আগেও দু’বার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে উদ্যোগী হন কাউন্সিলরেরা। কিন্তু প্রতি বারই দলের নির্দেশে ভেস্তে গিয়েছিল বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের সেই পরিকল্পনা। তবে এ বার দলের নির্দেশ অমান্য করেই বিরোধী কাউন্সিলরদের সঙ্গে একযোগে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা। আর এতেই নাকি বেজায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার আনন্দবাজার ডট কমকে সেই অসন্তোষের কথাও জানিয়েছিলেন। ইঙ্গিত মিলেছিল ব্যবস্থা নেওয়ার। তার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পৌর আইন অনুযায়ী বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের শো কজ় নোটিস পাঠাল পুর দফতর। দলীয় কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে পুর পরিষেবা ব্যাহত করার অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর এই নোটিস পাঠানোকে যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

২৯ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গলবার পৌর আইন ১৯৯৩-এর ধারা ৪৩১/১ অনুযায়ী পৌর ও নগর উন্নয়ন দফতরের জারি করা সেই শো কজ়ে বলা হয়েছে, কৃষ্ণনগর পুরসভায় পৌর ও নাগরিক পরিষেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার অভিযোগ পেয়েছে দফতর। পাশাপাশি, পুর নাগরিকদের গণস্বাক্ষর সম্মিলিত একটি অভিযোগপত্রও হাতে এসেছে দফতরের। দুই ক্ষেত্রেই অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বাভাবিক পুরপরিষেবা, যেমন আবাসের অনুমোদন, কর আদায়, পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা প্রভৃতি কাজ কাউন্সিলরদের অসহযোগিতায় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শহরের জঞ্জাল পরিষ্কার, নিকাশি নালার সংস্কার, জনতার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারণে বন্ধ হয়ে আছে। অনিয়মিত জঞ্জাল সাফাই শহরের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

চিঠির শেষে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এ সবের নেপথ্যে কৃষ্ণনগর পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলের সম্মিলিত অবহেলা লক্ষ করা গিয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের আগামী সাত দিনের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন ও পরিস্থিতির ব্যাখ্যা জানিয়ে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। ওই কারণসমূহের জন্য কেন এই বোর্ড অফ কাউন্সিল ভেঙে দেওয়া হবে না? এই প্রশ্নেরও যথাযথ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে শো কজ় চিঠিতে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ টালবাহানা শেষে কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবি গৃহীত হয় সোমবার। সূত্রের খবর, সোমবার কৃষ্ণনগর পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিল একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল। সেখানে ১৫ জনের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানকে অপসারণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। রীতার বিরুদ্ধে অনাস্থার দাবি তোলেন তাঁরই দলের কাউন্সিলরেরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠক শেষে ১৫-০ ভোটে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়। যেখানে ১৩ জনই ছিলেন শাসকদলের কাউন্সিলর। এক জন ছিলেন কংগ্রেস এবং অন‍্য জন নির্দল।

Krishnagar Municipal Corporation Councilors Show cause Notice TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy