প্রতীকী ছবি।
বসত জমি কিছুতেই বিক্রি করতে চাইছিলেন না স্বামী। নানা ফন্দি-ফিকির করেও রাজি করানো যায়নি তাঁকে। এই ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে-জামাইকে ছেড়ে নিজের পৈতৃক বাড়িতে পালিয়েও শেষরক্ষা হল না! সেখানেও পৌঁছে কার্যত ‘অপহরণ’ করে নিয়ে এসে স্বামী দশরথ দাসকে খুন করে বাড়ির ভিতরেই পুঁতে দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদের সুতি থানার পঞ্চবাটি এলাকায় ঘটনায় ধৃত স্ত্রী সুভদ্রা দাস ও বড় মেয়ে মোনা দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল পুলিশ। ধৃতদের জঙ্গিপুর আদালতে হাজির করিয়ে ইতিমধ্যেই ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর সুজনীপাড়ার পৈত্রিক বাড়ি রঘুনাথগঞ্জে স্ত্রীর সঙ্গে আলাদা থাকা শুরু করেছিলেন দশরথ। পরে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে আবার সুজনীপাড়ার বাড়িতে ফিরে যান। গত মঙ্গলবার ছেলের অসুস্থতার কথা জানিয়ে সুভদ্রা স্বামীকে ডেকে পাঠান। তার পর থেকেই দশরথের খোঁজ মিলছিল না। রঘুনাথগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন দশরথের ভাই উদয়কুমার দাস। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ সুভদ্রার বাড়িতে পৌঁছে দেখে, ঘর তালা বন্ধ। বাড়িতে নেই কেউ। এর পর থেকেই স্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ বাড়তে থাকে তদন্তকারীদের। প্রতিবেশীদের বয়ান সংগ্রহের সময় তাঁরা পুলিশকে জানান, দশরথের বাড়িতে নতুন মাটি ফেলা হয়েছে। তাতে সন্দেহ জোরালো হওয়ায় রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে শুক্রবার দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। খোঁড়া হয় মেঝে। কিন্তু তখন কিছুই খুঁজে পায়নি পুলিশ। এ সব নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শনিবার দুপুরে সুতি থানায় আত্মসমর্পণ করেন দশরথের স্ত্রী সুভদ্রা এবং তাঁর বড় মেয়ে মোনা দাস। তাঁরা জানান, দশরথকে বাড়িতেই পুঁতে রাখা হয়েছে। এর পর স্ত্রী এবং মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ । বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীই দেখিয়ে দেন, কোথায় তাঁর স্বামীকে পুঁতে রাখা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আর একটু খুঁড়ুন। অনেকটা নীচে রয়েছে।’’ আবার কোথাও ভুল হলে তা শুধরে দিয়েছেন মেয়েরা। টানা প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় শোওয়ার ঘরের মেঝেতে ১০ ফুট খুঁড়ে দশরথের পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে পলাতক ছেলে মধুসূদন দাস, দশরথের ছোট মেয়ে পূজা দাস। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ভিজি সতীশ জানান, ‘‘অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকি পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy