প্রতীকী ছবি।
স্বামী প্রথমপক্ষের স্ত্রীকেই বেশি ভালবাসেন, এমনই সন্দেহ ছিল তার। যত দিন গিয়েছে, জমে থাকা অভিমান ভিতরে ভিতরে আক্রোশের চেহারা নিয়েছিল। স্বামীর উপরে প্রতিশোধ নিতে শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রথমপক্ষের শিশুসন্তানকে ভাগীরথীর ফিডার ক্যানালে ছুড়ে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। শুক্রবার গভীর রাতে সুতির বাহাগলপুরের ঘটনা। অভিযুক্ত রেজবানু খাতুনকে শনিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিনই ঘটনাস্থল থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে, লালবাগের নতুনদিয়াড়ে ভাগীরথী থেকে ন’মাসের আবু তাহেরের দেহ উদ্ধার হয়।
সুতির বাহাগলপুরের বাসিন্দা লালবাবু শেখ দু’বছর আগে পাশের গ্রামের অসীমা খাতুনকে বিয়ে করেছিলেন। ন’মাস আগে ওই দম্পতির একটি পুত্রসন্তান হয়। লালবাবুদের বাড়ির কাছেই বাপেরবাড়ি রেজবানুর। বছর ছাব্বিশের রেজবানুর প্রায় ন’ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল শমসেরগঞ্জের কোহিতপুরের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তাঁদের তিনটি ছেলেমেয়ে রয়েছে। বছর দুই আগে রেজবানুর পরিবার বাহাগলপুরে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে। তখনই রেজবানু এবং লালবাবুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনে মাসখানেক আগে বিয়ে করেন। এ খবর জানতে পেরে হাবিবুর সন্তানদের নিয়ে বাহাগলপুর ছেড়ে কোহিতপুরে ফিরে যান।
কিন্তু যাঁকে বিয়ে করলেন, সেই লালবাবুর ওপর রেজবানুর আক্রোশের কারণ কী? জেরায় রেজবানু জানিয়েছে, মাসখানেক আগে সে লালবাবুর বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেছিল। কিন্তু স্বামীর ভালবাসা পায়নি একদিনের জন্যেও। রাতে প্রথমপক্ষের স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে লালবাবু ঘুমোতেন ঘরে। আর রেজবানু ঘুমোত লাগোয়া বারান্দায়। এ নিয়ে কিছু বললে লালবাবু তাকে মারধর করতেন বলে রেজবানুর দাবি। এরপরই স্বামীকে ‘চরম শিক্ষা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন লালবাবু। গরমের জন্য দরজা খোলা ছিল। রাত দেড়টা নাগাদ চুপিসাড়ে সেই ঘরে ঢোকে রেজবানু। তারপর ন’মাসের বাচ্চাটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে বাড়ির পাশেই ফিডার ক্যানালে ছুড়ে ফেলে দেয়। ফিরে এসে সে বারান্দায় ঘুমিয়ে পড়ে। ভোররাতে ঘুম ভেঙে ছেলেকে পাশে দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন অসীমা। সকালে গ্রামে পুলিশ যায়। রেজবানুর কথাবার্তায় তাদের সন্দেহ হয়। থানায় জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সে।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিশুটিকে জলে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে ওই মহিলা। স্বামীর উপর বদলা নিতেই সে এমনটা করেছে। ওই মহিলার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy