ভোটের লড়াই মুখের কথা নয়। তিনি জানতেন। সে লড়াইয়ে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। এটাও তাঁর অজানা নয়। কিন্তু রাতদুপুরে আচমকা কেউ আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে যদি নাগাড়ে হুমকি দিতে থাকে? নাহ্, এমনটা যে হতে পারে তিনি জানতেন না। ভাবতেও পারেননি। অথচ মঙ্গলবার রাতে তাঁকে এমন পরিস্থিতিতেই পড়তে হয়েছে বলে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শান্তিপুর কেন্দ্রের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়ার (এসডিপিআই) প্রার্থী নাজমা বিবি কয়াল। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাজমার বাড়ি হরিণঘাটায়। প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তিনি শান্তিপুরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। বর্তমানে সেখানেই তিনি থাকেন। নাজমা জানান, মঙ্গলবার দিনভর প্রচার ও দলীয় কাজকর্ম সেরে ঘুমোতে ঘুমোতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল। রাত তিনটে নাগাদ জানালায় আওয়াজ শুনে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখেন জানালাটি বাইরে থেকে খুলে ফেলা হয়েছে।
ওই প্রার্থীর অভিযোগ, সে দিকে এগোতেই তিনি দেখতে পান জানালার ওপারে দু’জন দাঁড়িয়ে আছে। তাদের হাতে রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। নাজমার কথায়, ‘‘আমার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে দু’জনেই গালিগালাজ করছিল। শাসিয়ে গিয়েছে, ‘আজ ছেড়ে দিলাম। তেমন হলে পরের দিন মেশিনের ঘোড়া চালিয়ে দেব’।’’
এরপর নাজমার চিৎকারে পাশের ঘর থেকে ছুটে আসেন তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা। তখনই চম্পট দেয় ওই দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু এসডিপিআই-এর ওই মহিলা প্রার্থীকে এমন হুমকি দেওয়া কেন?
নাজমার দাবি, শান্তিপুরে বিভিন্ন এলাকায় তিনি সভা করছেন। সেই সভাতে ভিড় উপচে পড়ছে। আর সেটাই সহ্য করতে পারছে না অনেকেই। সেই কারণেই তাঁকে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে। সরাসরি তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে না চাইলেও সিপিএম-কংগ্রেস জোট কিন্তু তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে এই ঘটনার নিন্দা করছে।
সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য সোমেন মাহাতো বলেন, ‘‘শান্তিপুর যে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে তা আরও একবার প্রমাণিত হল। এর আগেও পুরভোটের সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস চালিয়েছে। এ বারেও তারা সেই চেষ্টা করছে। এখানে একজন প্রার্থীকেও নিরাপদে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না।’’
অভিযোগ উড়িয়ে শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে বলছেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা এমন কুৎসা রটাচ্ছেন তাঁরা নিজেদের হার যে নিশ্চিত তা বুঝতে পেরেছেন। আর সেই হতাশা থেকেই এমন মিথ্যে অভিযোগ করছেন। ওই প্রার্থীকে যদি কেউ হুমকি দিয়ে থাকে পুলিশ-প্রশাসন তার তদন্ত করুক। তা হলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy