প্রতীকী ছবি।
বিমান বসু বা সূর্যকান্ত মিশ্ররা আর নয়। তরুণদের উপরেই আস্থা রাখছে বামেরা। তাই জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে বাম প্রার্থীদের প্রচারে নিয়ে আসা হচ্ছে একদল নয়া তরুণ মুখকে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, শতরূপ ঘোষ ছাড়াও আরএসপি ও সিপিএমের তরুণ নেতাদের দিয়ে এ বারে এই দুই কেন্দ্রে প্রচারে নামছেন বামেরা।
কারণ দল মনে করে, এঁরা নিজেরা বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হারলেও, এঁদের বক্তব্য বেশ সাড়া জাগিয়েছিল মানুষের মনে সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে।
ভবানীপুরে কংগ্রেসের ভূমিকা যা তাতে বামেরাও ঠিক আর ভরসা রাখতে পারছেন না জেলার কংগ্রেস নেতাদের উপর।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শমসেরগঞ্জের মহম্মদ আজাদ আলি বলছেন, ‘‘ভবানীপুরে প্রার্থী না দিয়ে কার্যত কংগ্রেস যে তৃণমূলকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে তা স্পষ্ট। তাই মুর্শিদাবাদের এই দুই কেন্দ্রে কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কী করবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে আমাদের। এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের স্থানীয় বা জেলা স্তরের কোনও নেতার সঙ্গেই কথা হয়নি কোনও বাম নেতার। কাজেই বামেদের হয়ে কংগ্রেস নেতারা শমসেরগঞ্জে প্রচারে নামবেন, এখনও সে ভরসা নেই বামেদের।’’ তবে জঙ্গিপুরে কংগ্রেস তাদের হয়ে নামার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী শুক্রবার বলেন, “ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হওয়ায় কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী দেয়নি। স্বাভাবিক কারণেই বিজেপির সুবিধে হয় এমন কাজ কংগ্রেস করবে না। শমসেরগঞ্জ নিয়ে এখনও পর্যন্ত বামেদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। তাই সেখানে কোনও প্রচারে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা গড়ে ওঠেনি। সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী নেই। তাই স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা স্থানীয় ভাবে কী করবেন সেটা তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তাঁরা এমন কোনও কাজ করবেন না, যাতে বিজেপি সুবিধা পায়।”
কংগ্রেসের জঙ্গিপুর মহকুমা সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা অবশ্য বলছেন, “জঙ্গিপুরে বামেদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। আমরা সেখানে বাম প্রার্থীর সমর্থনেই প্রচার করব। তবে শমসেরগঞ্জে এখনও বামেদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি কংগ্রেসের। রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের কথা স্পষ্ট করবেন।”
কংগ্রেসের এক প্রাক্তন বিধায়কের কথা, “এই ভাবে দ্বিচারিতা করে করেই কংগ্রেস কঙ্কালসার চেহারা নিয়েছে এ রাজ্যে। শাসক দলের রোষে বহু কংগ্রেস কর্মী মিথ্যে মামলায় জেল খাটছেন। কংগ্রেস বিধায়কদের লোভ দেখিয়ে ভাঙিয়ে নিচ্ছে একের পর এক। তার পরেও তৃণমূলকে ভোট দিতে বলা মানে কংগ্রেস মুর্শিদাবাদ জেলায় যেটুকু আছে তারাও দলবদল করতে বাধ্য হবে।”
শমসেরগঞ্জের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তোয়াব আলি বলেন, “আমরা দলের প্রার্থীকে জেতাতে প্রচারে নেমেছি। কোথাও কোনও বড় সভা হবে না। প্রবীণ নেতাদেরও আনা হচ্ছে না প্রচারে। ১৬ সেপ্টেম্বর একটি কর্মসূচি ছিল মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের। সেটা বন্ধ হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘২০ সেপ্টেম্বরের পর মীনাক্ষী সহ ৪/৫ জন তরুণ নেতা আসবেন। তাদের একটা ইমেজ তৈরি হয়েছে তরুণ ভোটারদের মধ্যে। এই সব তরুণ ভোটারদের মনে কর্মসংস্থান, প্রশাসন, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে। তারা তরুণ নেতাদের কথা শুনতে চায়। তাই তাদের দিয়ে বেশ কিছু পথসভা করানো হবে শমসেরগঞ্জে। এটাই ঠিক হয়েছে।”
জঙ্গিপুরের বামপ্রার্থী আরএসপির জানে আলম মিঞা বলেন, “বুধবার দলের জেলা সম্পাদক একটি কর্মী বৈঠক করে গেছেন। আমার সঙ্গেও স্থানীয় সিপিএম নেতাদের কথা হয়েছে। একটি নির্বাচনী কর্মসূচিও ঠিক হয়েছে। তবে কোনও বড় নেতা প্রচারে আসবেন না। কিছু বাম ছাত্র যুব নেতা আসবেন, যারা ভাল বক্তা। ২০টি পথসভা করবেন তারা। এর জন্য জায়গাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে।২০ সেপ্টেম্বর থেকে তা শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy