নিহত কালাচাঁদ। নিজস্ব চিত্র
চায়ের দোকান থেকে এক যুবককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তাঁর বন্ধুকে। কালাচাঁদ ঘোষ (২৭) নামে নিহত ওই যুবকের বাড়ি নবদ্বীপের প্রফুল্লনগর কলোনিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি সকালে নবদ্বীপ ধাম স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কালাচাঁদের। পরে নিহতের পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন, ১৯ জানুয়ারি রাতে কালাচাঁদকে শেষ বার তাঁর বন্ধু রাজু রায়ের বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে রাজু এবং তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী রায় গা ঢাকা দেন। নিহতের বাবা স্বপন ঘোষ ২৪ জানুয়ারি কালনা জিআরপিতে রাজু এবং লক্ষ্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে শুক্রবার গভীর রাতে রাজুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। লক্ষ্মী এখনও পলাতক। পুলিশ তার খোঁজ চালাচ্ছে।
নবদ্বীপের প্রফুল্লনগরের পুরনো টোলগেটের কাছে কালাচাঁদের একটি চায়ের দোকান আছে। কালনা জিআরপিতে দায়ের করা অভিযোগে নিহতের বাবা জানিয়েছেন, গত ১৯ জানুয়ারি রাত ৯টা নাগাদ তিনি ছেলের হাতে দোকান ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। এর পরে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ রাজু এবং তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী কালাচাঁদকে দোকান থেকে ডেকে তাঁদের বাড়ি নিয়ে যায়। রাত দেড়টা বেজে গেলেও কালাচাঁদ বাড়ি না ফেরায় তাকে মোবাইলে ফোন করা হয়। ফোনে তিনি জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরবেন। এর পরে তাঁর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। পর দিন সকালে রেল লাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয় কালাচাঁদের মৃতদেহ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কালাচাঁদের সঙ্গে রাজুর বন্ধুত্ব বহু দিনের। বন্ধুত্বের কারণে কালাচাঁদ রাজুর বাড়িতে প্রায়ই যেতেন। সেই সূত্রে রাজুর স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। রাজু ব্যাপারটিকে ভাল চোখে দেখেনি। কালাচাঁদের বাবার অভিযোগ, বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর ছেলেকে আকণ্ঠ মদ্যপান করায় রাজু। কালাচাঁদ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাঁর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। এর পর স্ত্রীয়ের সাহায্যে ঘরের পাশেই রেললাইনের ধারে দেহটি ফেলে দেয় সে। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে রাজুর বাড়িতে রক্তের দাগ পাওয়া যায়। এর পরেই রাজু ও তাঁর স্ত্রীয়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
নিহতের বাবা স্বপন ঘোষ বলেন, “ছেলেকে মিথ্যা সন্দেহ করত রাজু।” কালাচাঁদের দাদা সঞ্জিত ঘোষ বলেন, “ভাইকে রাজু ও তার স্ত্রী পরিকল্পনা করে খুন করেছে। ওদের কঠিন শাস্তি চাই।” শুক্রবার রাতে নবদ্বীপের কালীনগর এলাকা থেকে রাজুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার দুপুরে তাকে কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হলে তার পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy