অফিসের প্রধান গেটের বাঁ দিকে ডাঁই হয়ে আছে আবর্জনার স্তূপ। ভেসে আসছে দুর্গন্ধ। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে ডুবে যায় চারদিক। এমনই হাল বড়ঞা ব্লক অফিসের।
কান্দি-ডাকবাংলা রাজ্য সড়কের ধারে প্রায় ২২ বিঘা সরকারি জায়গায় জুড়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা ব্লক অফিস, বড়ঞা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয় ও ব্লক পশু চিকিৎসা কেন্দ্র। দিনভর ওই ব্লকের ১৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু মানুষ ব্লক অফিসে নানা জরুরি কাজে আসেন। অথচ অফিস চত্বরে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যূনতম পরিষেবাটুকু নেই। স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ দাস, বাবর আলিরা বলেন, ‘‘ব্লক অফিসে সাধারণ মানুষের জন্য কোনও শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। সব থেকে বিপাকে পড়েন মহিলারা। দফতরের কর্তারা সব কিছু জানা সত্ত্বেও কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না।” শৌচাগার অবশ্য রয়েছে দু’টি। কিন্তু তাতে সব সময় তালা ঝুলে থাকে। একই অবস্থা পানীয় জলের। পানীয় জলের একমাত্র উৎস নলকূপ। অফিস চত্বরে একটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু তার জল এত দুর্গন্ধযুক্ত যে মুখে তোলা ভার। অফিস চত্বরে আরও দু’টি নলকূপ থাকলেও সেগুলি বিকল। নলকূপ দু’টি মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিডিও বাদশা ঘোষাল বলেন,“বিকল নলকূপ দু’টি লোকসভা ভোটের আগে মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত চাপে বিকল হয়ে গিয়েছে। ফের সেগুলি মেরামত করার চেষ্টা চলছে। শৌচাগার পুনর্ব্যবহার যোগ্য করে তোলার জন্য কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
ব্লক অফিসে প্রবেশ পথের বাঁ দিকে ডাঁই হয়ে আছে আবর্জনার স্তূপ। তার ঠিক পাশেই গড়ে উঠেছে অনেক অস্থায়ী শৌচাগার। অবাধ আগাছায় ছেয়ে গিয়েছে গোটা অফিস চত্বর। ঝোপের আড়ালে পড়ে থাকতে দেখা যায় দেশি মদের বোতল। সন্ধ্যার পরে ওই ২২ বিঘা এলাকায় মাত্র চারটি আলো জ্বলে। নিজস্ব কোন নিরাপত্তারক্ষী নেই। গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয় থেকে ধার করে নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করেছেন দফতরের কর্তারা। কয়েক মাস আগে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয়ের নড়বড়ে জানলা ভেঙে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল চুরি হয়ে গিয়েছিল। যদিও কয়েক দিন পরে তা উদ্ধার হয়। সন্ধ্যা নামলেই অফিস চত্বরে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের আসর বসে। পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে যে কংক্রিটের শেডটি রয়েছে সেটিও ভগ্নপ্রায়। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে গিয়ে বিপদ ঘটতে পারে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
দফতরের বেহাল দশার কথা মেনে নিয়ে বিডিও বাদশা ঘোষাল বলেন, “পাঁচিল না থাকায় এই সব সমস্যা হচ্ছে। শীঘ্রই পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তিনটি গেটও হবে। গোটা অফিসে চারশো গাছ লাগানো হবে। প্রয়োজনীয় আলোরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy