Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

একমাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লি বিকল, ভোগান্তি

তিন সপ্তাহ ধরে বিকল জঙ্গিপুর পুরসভার রঘুনাথগঞ্জ শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি। এ দিকে, বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হয়ে যাওয়ার পর কাঠের জোগানও বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। শবদাহ করতে এসে তাই নাকাল হচ্ছেন আত্মীয় পরিজনেরা। কেউ বেশি টাকা দিয়ে কাঠ কিনছেন কোনও রকমে। কেউ বা কাঠ সংগ্রহ করতে না পেরে মৃতদেহ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন আহিরণ, ধুলিয়ান বা বহরমপুরের শ্মশানে।

কাজ চলছে চুল্লির। —নিজস্ব চিত্র।

কাজ চলছে চুল্লির। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০০:২১
Share: Save:

তিন সপ্তাহ ধরে বিকল জঙ্গিপুর পুরসভার রঘুনাথগঞ্জ শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি। এ দিকে, বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হয়ে যাওয়ার পর কাঠের জোগানও বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। শবদাহ করতে এসে তাই নাকাল হচ্ছেন আত্মীয় পরিজনেরা। কেউ বেশি টাকা দিয়ে কাঠ কিনছেন কোনও রকমে। কেউ বা কাঠ সংগ্রহ করতে না পেরে মৃতদেহ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন আহিরণ, ধুলিয়ান বা বহরমপুরের শ্মশানে। এমনকী বৈদ্যুতিক চুল্লি খারাপ থাকায় গত তিন সপ্তাহ থেকে জঙ্গিপুর হাসপাতালের পুলিশ মর্গে বেওয়ারিশ মৃতদেহও সৎকার করা যাচ্ছে না।

জঙ্গিপুরের উপ-পুরপ্রধান অশোক সাহার বক্তব্য, “চুল্লির ফার্নেস ভেঙে গিয়েছে। অন্য কিছু যন্ত্রপাতিও খারাপ হয়ে ২২ এপ্রিল থেকে বিকল হয়ে রয়েছে এই চুল্লিটি। শবযাত্রীদের বলা হয়েছে কাঠে দাহ করতে। কাঠ মৃতের আত্মীয়দেরই সংগ্রহ করে আনতে হবে। যেহেতু পুরসভা বৈদ্যুতিক চুল্লি চালুর পর বছর চারেক থেকে কাঠ জোগানের ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে, তাই পুরসভার পক্ষে এই মুহূর্তে শবদাহের জন্য প্রতিদিন বিপুল পরিমানে কাঠ সরবরাহ করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আমরাও শুধুমাত্র শংসাপত্র নেওয়ার জন্য ৫০ টাকা ফি ছাড়া শবযাত্রীদের কাছে আর কোনও পুরকর নিচ্ছি না।” উপপুরপ্রধানের আশ্বাস, “কৃষ্ণনগর থেকে মিস্ত্রি আনা হয়েছে। আশা করছি দু’দিনের মধ্যেই চুল্লিটি চালানো যাবে।” পুরকর্তা এই আশ্বাস দিলেও চুল্লি সারানোর কাজে নিযুক্ত মিস্ত্রি জয়দেব বিশ্বাস অবশ্য বলছেন, “৫ দিনের আগে চুল্লি চালানো সম্ভব নয়। চুল্লির যে ফার্নেস রয়েছে অত্যধিক আগুনের তাপে প্রতি বছরই তা ভাঙবে এবং তা বদলাতে হবে। ফার্নেস ঠান্ডা হতে ৫ দিন, পরিষ্কার করতে দু’দিন এবং লাগাতে ৫ দিন ছাড়াও বাড়তি ৪/৫ দিন সময় লাগবে। শ্মশানে দ্বিতীয় চুল্লি না থাকলে প্রতি বছরই মোটামুটি দিন কুড়ি বন্ধ রাখতেই হবে বৈদ্যুতিক চুল্লি। সেক্ষেত্রে কাঠের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে দুর্ভোগে পড়তেই হবে।”

ভাগীরথীর তীরে কয়েকশো বছরের প্রাচীন রঘুনাথগঞ্জের এই মহাশ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য বীরভূম, ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষজন আসেন নিয়মিত। সোমবার ১৪টি মৃতদেহ এসেছিল রঘুনাথগঞ্জ শ্মশানে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর দু’টি মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে চলে যেতে হয়। কারণ একে তো কাঠ মেলেনি, তার উপর তা সাজানোর মতো কোনও জায়গাও ছিল না শ্মশানে। শবযাত্রী ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর গ্রামের মহেন্দর সিংহ বলেন, ‘‘শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি যে বিকল তা জানতাম না। বাড়িতে বহু কাঠ রয়েছে। জানলে সঙ্গে নিয়ে আসতে পারতাম। শেষ পর্যন্ত বহু কষ্ট করে ৩০০ টাকা মণ দরে পাশের গ্রামের এক কাঠগোলা থেকে ৬ মণ কাঠ কিনে এনে চুল্লি সাজাতে হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raghunathganj electric furnace burning ghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE