Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

গাড়ি-চালকের মুক্তিপণে দাবি ১০ লক্ষ টাকা

গাড়ি ভাড়ার নাম করে ডেকে পাঠিয়ে গাড়ি-সহ চালককে ‘অপহরণের’ অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে লালগোলা বাসস্ট্যান্ডে। অভিযোগ, লালগোলার মিদ্দাদপুরের বাসিন্দা বছর কুড়ির সোহেল হাসান ওরফে পাপ্পুকে গাড়ির ভাড়ার নামে ডেকে পাঠিয়ে অপহরণ করে মালদহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই অপহরণকারীরা সোহেলের বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০০:২৫
Share: Save:

গাড়ি ভাড়ার নাম করে ডেকে পাঠিয়ে গাড়ি-সহ চালককে ‘অপহরণের’ অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে লালগোলা বাসস্ট্যান্ডে। অভিযোগ, লালগোলার মিদ্দাদপুরের বাসিন্দা বছর কুড়ির সোহেল হাসান ওরফে পাপ্পুকে গাড়ির ভাড়ার নামে ডেকে পাঠিয়ে অপহরণ করে মালদহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই অপহরণকারীরা সোহেলের বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। এমনকী ওই মুক্তিপণের অর্থ দিতে না পারলে সোহেলকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। গোটা বিষয়টি জানিয়ে ওই পরিবার স্থানীয় লালগোলা থানায় অভিযোগও দায়ের করে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। ফলে বহরমপুরে এসে বুধবার মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তারা। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ফোন করে লালগোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে জঙ্গিপুর নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই গাড়ি ভাড়া করে ছ’জন। অপহৃত সোহেলের বাবা মহম্মদ সইবুর রহমান বলেন, “গাড়ি ভাড়ার জন্য প্রায় চার মাস আগে পুরনো মারুতি ভ্যান গাড়ি কিনে দিই ছেলেকে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সোহেল বাড়িতেই ছিল। সেই সময়ে লালগোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে জঙ্গিপুর যাওয়ার জন্য ওর মোবাইলে ফোন আসে। ওই ফোন পেয়ে ছেলে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। তার পরে ওই রাতে ছেলে বাড়ি ফেরেনি। সকালেও বাড়ি ফিরে না আসায় চিন্তা শুরু হয়।” তিনি জানান, “২২ অক্টোবর সকালে ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে আমার মোবাইলে ফোন আসে। সেই সঙ্গে ছেলেকে ফিরে পেতে হলে ১০ লক্ষ টাকা দাবি জানায় অপহরণকারীরা। মালদহের কালিয়াচক বাসস্ট্যান্ডে ওই টাকা নিয়ে আসার কথা বলে।”

এর পরেই গোটা বিষয়টি জানিয়ে লালগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেয়ে ওই যুবকের বাবাকে নিয়ে মালদহ যায় লালগোলা থানার একটি পুলিশ দল। কিন্তু মালদহের কালিয়াচকে গিয়ে খোঁজ করেও কোনও কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সোহেলের পরিবার অবশ্য কালিয়াচক থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ করছে। প্রতিবেশী জিয়াউল হক বলেন, “অপহরণকারীদের ফোন থেকে সোহেল কথা বলে কান্নাকাটি করছে। চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিতে না পারলে প্রতি মুহূর্তে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানায়। পুলিশ গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না বলে মনে হচ্ছে। ফলে জেলা পুলিশ সুপারের পাশাপাশি জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।”

পেশায় দিনমজুর সোহেলের বাবা বলেন, “তিন জন অপহরণকারীর নাম জানতে পেরেছি। অপহরণকারীরা যে ফোন নম্বর থেকে কথা বলেছে, সেই নম্বরও থানায় জমা দিয়েছি। কিন্তু আমি গরীব মানুষ। দিনমজুরি করে সংসার চালাই। আমার পক্ষে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। এখন পুলিশই আমার ছেলেকে উদ্ধার করে দিতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

berhampur ransom driver lalgola
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE