চরের জমির দখলকে কেন্দ্র করে এক সিপিআই (এমএল) সমর্থককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকেলের ওই ঘটনায় মৃতের নাম ইউসুফ মোল্লা (৪০)। তাঁর বাড়ি ধুবুলিয়ার চরমহৎপুরে। এই ঘটনায় চরমহৎপুর গ্রামের বাসিন্দা শুকচাঁদ শেখ জখম হয়েছেন। তিনি শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বছর পনেরো আগে জলঙ্গির বুকে গজানো শ’খানেক বিঘের চরের দখল নেন চরমহৎপুর গ্রামের একাংশ বাসিন্দা। তাঁরা সিংহভাগই সিপিআই (এমএল)-এর কর্মী-সমর্থক। সমস্যার সূত্রপাত ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে। পড়শি গ্রাম পুখুরিয়ার মূলত তৃণমূলের লোকজনের নজর পড়ে চরের ওই জমির উপর। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে জলঙ্গি। চরের উপর আমাদের অধিকার রয়েছে। কারণ, চরের আশপাশে যাঁদের জমি রয়েছে তাঁরা চরের জমির দাবিদার।” গত বছর আড়াই ধরে চরের জমি অধিকার নিয়ে শাসকদল ও লিবারেশনের প্রায়শই সংঘর্ষ চলছিল। উভয় দলই অস্ত্রশস্ত্র মজুত করতে থাকে। গত মাস তিনেকের মধ্যে বেশ কয়েকবার ওই এলাকার বোমা-গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। চলতি মাসের ৯ তারিখেই দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সে দিন অবশ্য কেউ হতাহত হননি।
এ দিন চরের জমিতে কাজ করছিলেন চরমহৎপুরের বাসিন্দা শুকচাঁদ শেখ-সহ বেশ কয়েকজন। অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের লক্ষ্য করে জনাকয়েক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী গুলি চালায়। গুলি লাগে শুকচাঁদের। তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসেন ইউসুফ। দুষ্কৃতীরা চার-পাঁচ হাত দূর থেকে ইউসুফের পিঠে গুলি করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় ইউসুফকে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খানিক পরেই ধুবুলিয়া থানার পুলিশ অকুস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের সামনে গ্রামের লোকজন মৃতদেহ ফেলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সন্ধ্যার দিকে নিহতের বাড়িতে যান লিবারেশনের জেলা স্তরের নেতা সুবিমল সেনগুপ্ত। সুবিমলবাবু সরাসরি শাসকদলের দিকে আঙুল তুলে বলেন, “তৃণমূলের লোকজন ভোটের আগে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করতে আমাদের কর্মীকে খুন করল। চরমহৎপুরের লোকজন বহু দিন ধরেই চরের জমি চাষ করছেন। ইদানীং ওই জমির পাট্টা দেওয়ার প্রশাসনিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল।” কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শিবশঙ্কর দত্ত অবশ্য বলেন, “আমাদের কর্মী-সমর্থকরা এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ছিলেন। অতএব এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ থাকতে পারে না।” এ দিন রাত সাড়ে ন’টা অবধি অবশ্য মৃত বা জখম ব্যক্তির পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy