জোনাল কমিটির এক সদস্যকে দুষ্কৃতীদের মারধরের ঘটনায় ১২ ঘণ্টা শান্তিপুর বন্ধর ডাক দিয়েছিল সিপিএম। রবিবারের ওই বন্ধে মিশ্র সাড়া পড়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, কোথাও কোথাও তৃণমূলের লোকজন ব্যবসায়ীদের বাধ্য করেছেন দোকান খুলে রাখতে। কিন্তু তাতেও বন্ধে কোনও প্রভাব পড়েনি। এ দিনের ওই বন্ধের কারণে বেশিরভাগ দোকানপাটই বন্ধ থাকলেও শহরের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ছিল।
শুক্রবার সকালে শান্তিপুরে পেশায় শিক্ষক সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে বেধড়ক মারধর করে এক দল দুষ্কৃতী। তার মোটরবাইকটিও ভাঙচুর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে শান্তিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও শান্তিপুরের পুর-প্রধান তৃণমূলের অজয় দে বলেন, “দল এ ঘটনায় জড়িত নয়। ছুটির দিনে বন্ধ ডাকা থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার মানুষের সমর্থন কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে।”
বিরোধীদের দাবি, সামনেই পুরভোট। তার আগে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। সিপিএমের দাবি, ওই এলাকায় এখনও সিপিএমের যথেষ্ঠ দাপট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি সিপিএমকে কোনও মতে হটাতে পারলে লাভ তৃণমূলেরই। দীপঙ্করবাবু বলেন, “বিভাজনের রাজনীতি করে তৃণমূল ফায়দা তুলছে।” সম্প্রতি অজয়বাবু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার উপরে তাঁরই হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়ায় বেজায় অসন্তুষ্ট স্থানীয় নেতারা। তাঁদের কেউ কেউ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাই পুরভোটে তৃণমূলকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে বলে বিরোধীদের দাবি। তাই কোনও রকমে ঝুঁকি না নিয়ে পুরভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার আগে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আমাদের নেতৃত্বের উপরে আক্রমণ করছে তৃণমূল। ওই দিনের ঘটনা তারই একটা নমুনা মাত্র।” অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন ধরেই নবদ্বীপ পুরসভার ১৫ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির পতাকা পুড়িয়ে দেওয়া বা ৩ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পতাকা ছিঁড়ে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের যুব মোর্চার সম্পাদক সুমিত দে-সহ দু’জনের নামে মিথ্যে মামলা করা হয়েছে। বিজেপির জেলা কমিটির সহ-সভাপতি জীবনকৃষ্ণ সেন বলেন, “মালিকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করে দলের বহু কর্মী ও সমর্থক বিভিন্ন দোকানে বা নানা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, গত লোকসভা ভোটে পুরসভা এলাকাতে ভোট প্রাপ্তির নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তাই আতঙ্কিত হয়েই এই ধরনের সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ পাল বলেন, “আসন্ন পুরভোটে হারার আশঙ্কা থেকে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছে বিজেপি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy